পাতা:দেওয়ানা - হরিসাধন মুখোপাধ্যায়.pdf/১১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দেওয়ানা

মধ্যে, তাঁহার প্রিয়তমা পত্নীর বিশ্রামাগারে, বাহারবানুর মত কলঙ্কিতার উপস্থিতি ব্যাপারটা, তাঁহার হৃদয়ে বড়ই একটা আঘাত করিল। তিনি বিরক্তিসূচক স্বরে, বাহারের দিকে চাহিয়া বলিলেন—“কি প্রয়োজনে এখানে আসিলে বাহারবানু?”

 বাহারবানু, নবাবকে একটী সেলাম করিয়া শ্লেষপূর্ণ মৃদু হাস্যের সহিত বলিল—“জনাবের চরণ দর্শন করিব বলিয়া। এই তিন মাস দেখা সাক্ষাৎ হয় নাই, এজন্য আমার দিল্‌টা বড়ই বেতমিজ হইয়া পড়িয়াছে। তাহা ছাড়া জনাবালির সঙ্গে গোপনে দুই চারিটী কথা কহিব বলিয়াই এখানে আসিয়াছি।

 নবাব সুজাবেগ, একবার মাত্র আনারউন্নিসার মুখের দিকে চাহিলেন। দেখিলেন—বাহারের এই ধৃষ্টতাসঞ্জাত অপমানে আনারউন্নিসা খুবই ক্রুদ্ধ হইয়াছে। তাঁহার আরক্তিম গণ্ড-দেশের ক্রোধজমিত লাল আভা তখনও সম্পূর্ণ রূপে বিলুপ্ত হয় নাই। নাসারন্ধ, স্ফীত, চক্ষে বিদ্যুৎ রেখা—মুখেও যেন একটা বিজাতীয় ঘৃণার ভাব ফুটিয়া উঠিয়াছে।

 নবাব সুজাবেগ, বাহারবানুর দিকে চাহিয়া, দৃঢ় স্বরে বলিলেন,—“তোমার যদি কোন বিশেষ গোপনীয় কথাই থাকে, তুমি আমার সঙ্গে এস। এ কক্ষে আসা তোমার খুব অন্যায় কাজ হইয়াছে।”

 বাহারবানু এ কথায় মর্ম্মে মর্ম্মে জ্বলিয়া উঠিল। সে বলিল—“কেবল আপনাকে নয় আপনার নূতন বেগম এই আনারউন্নিসাকেও আমার দুই চারিটা কথা বলিবার ছিল।

১১২