পাতা:দেওয়ানা - হরিসাধন মুখোপাধ্যায়.pdf/১২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দেওয়ানা

 আনার মনে মনে বলিল— “হায়! কেন একটা নিষ্ঠুরতাবশে গোপনে থাকিয়া তাহাদের কথাবার্ত্তা শুনিলাম? কেন ইচ্ছা করিয়া প্রাণের অশান্তি ডাকিয়া আনিলাম? বাহারবানু আমার সুখের সংসারে আগুণ জ্বালাইতে আসিয়াছিল। হায়! কেন আমি বুঝিতে না পারিয়া, স্বেচ্ছায় ফুৎকার দিয়া তাহার কলুষিত চিত্তপ্রসূত সেই আগুণ জ্বালাইলাম! কেন নিজের চিত্ত মধ্যে স্বেচ্ছাসৃজিত অশান্তির সৃষ্টি করিলাম? জগতে—লোকের নেত্রান্তরালে যে কত কি ব্যাপার যে ঘটিয়া যায়। কেই বা চেষ্টা করিয়া সকল ঘটনার সংবাদ রাখে? এ ব্যাপারে এরূপ উপেক্ষার ভাব দেখাইলে ত আমি এতটা মনকষ্ট পাইতাম না।

 নারীর শক্তির কি কোন মূল্যই নাই? নারীর হৃদয়ে কি কোনই তেজোময় কার্য্যকরী শক্তি নাই? যদি থাকে, তাহা হইলে সেই শক্তির সহায়তায় আমি কি এই বাহারবানুর কবল হইতে; আমার স্বামীকে মুক্ত করিতে পারিব না?

 এই বাহারবানু অর্থের প্রয়াসিনী। আমার স্বামী আমাকে স্ত্রীধন রূপে প্রচুর অর্থ দিয়াছেন। এই অর্থবলেও কি আমি বাহারকে আমার পথ হইতে সরাইতে পারিব না?

 চেষ্টায় ক্ষতি কি? চেষ্টায় না হয় কি? বাহারবানু এই সহরের বাহিরে থাকে শুনিয়াছি। আমার কোন বিশ্বাসী গোলামকে দিয়া তাহাকে একখানি পত্র লিখিয়া পাঠাই। তাহাকে এখানে আসিতে আহ্বান করি। যদি আসে, তখন

১২৪