পাতা:দেওয়ানা - হরিসাধন মুখোপাধ্যায়.pdf/১৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দেওয়ানা

আমরা খাইয়াছি। আমাদের এ পদ ঐশ্বর্য্য সবই ত আপনার মেহেরবানে জনাবালি! আমরা আবার আপনার গৌরবান্বিত মুকুট ও তরবারি স্পর্শ করিয়া প্রতিজ্ঞা করিতেছি—দেহে প্রাণ থাকিতে, আমাদের সঞ্চিত বিত্তের একটী কপর্দক থাকিতেও, আমরা আপনার সহায়তা করিতে বিমূখ হইব না। “আল্লা-হো আকবর!” সেই ঈশ্বরই শ্রেষ্ঠ। আর হজরতই তাঁর প্রতিনিধি। আমরা তাঁহাদের নাম লইয়া জনাবের কার্য্যে জীবন সমর্পণের জন্য, বার বার তিনবার প্রতিজ্ঞা বদ্ধ হইলাম।”

 বাদশাহী নহবতখানা হইতে এই সময়ে দ্বিতীয় প্রহরের নহবৎ বাজিয়া উঠিল। সেই চন্দ্রালোকিত নিথর—মধু যামিনীতে, মধুর বেহাগের মর্ম্মস্পর্শী আলাপ শুনিতে শুনিতে, সকলেই শাহজাদার নিকট হইতে বিদায় লইয়া প্রাসাদের বাহিরে আসিলেন। সকলেরই যান-বাহন সেখানে অপেক্ষা করিতেছিল।

 নবাব সুজা বেগ বাটীতে ফিরিয়া আসিয়া, সরাসর অন্তঃপুরে গেলেন। তাঁহার কক্ষ মধ্যে প্রবেশ করিতে যাইতেছেন—এমন সময়ে জুমেলি কুর্ণীস করিয়া তাঁহার সম্মুখে আসিয়া দাঁড়াইল।

 সুজা বেগ, ততরাত্রি পর্য্যন্ত জুমেলিকে জাগিয়া থাকিতে দেখিয়া,বিস্মিতচিত্তে বলিলেন “এত রাত হইয়াছে— তবু তোমরা জাগিয়া আছ—জুমেলি! বেগমও তাহা হইলে আমার আশাপ্রতীক্ষায় জাগিয়া আছেন?”

 জুমেলি বলিল— “তাঁর তবিয়ৎটা আজ বড় ভাল নয়,

১৩৬