পাতা:দেওয়ানা - হরিসাধন মুখোপাধ্যায়.pdf/১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দেওয়ানা

আমি একটা কথা মনে মনে এতক্ষণ ভাবিতেছিলাম। যদি কন্যার বেয়াদবী বলিয়া না ভাবেন, তাহা হইলে সেটি আপনাকে গুনাইতে ইচ্ছা করি। মা—মরিবার পর হইতে কোন কথাই আমি আপনার কাছে গোপন করি না। মনে যখন যা উদয় হয়, আপনাকেই বলি।”

 কন্যার মুখে এইরূপ লম্বা ভূমিকা শুনিয়া, বৃদ্ধ জামাল খাঁ তাঁহার হেনারঞ্জিত পীতবর্ণের পক্ক শ্মশ্রু রাজির মধ্যে অঙ্গুলি প্রবেশ করাইয়া দিয়া—তাহা চিত্তাপূর্ণ ভাবে মোচড়াইতে মোচ্ড়াইতে বলিলেন—“কি কথা তুমি আমাকে বলিতে চাও আনার? তোমার স্নেহময়ী মাতার মৃত্যুর পর হইতে, আমার নিকট তোমার মনোভাব প্রকাশ করার সম্বন্ধে আমি যে তোমায় পূর্ণ স্বাধীনতাই দিয়াছি। কখনও ত তোমার এ অধিকারের সংকোচ করি নাই— ও ভবিষ্যতেও করিবও না।”

 পিতার কথায় একটু সাহস পাইয়া, আনার উন্নিসা মেঝের দিকে তাহার দৃষ্টিসংযত করিয়া বলিল—“আমি বলি কি,এই হার নবাবজাদাকে ফিরাইয়া দিই। যে রত্নহার আমাদের বাড়ীতে প্রবেশ করিয়া আপনার ও আমার মনে দারুণ দুশ্চিন্তা সঞ্চার করাইয়া দিয়াছে, তাহা আলোয় আলোয় বিদায় করাই ভাল।”

 জামাল খাঁ কন্যার কথা শুনিয়া, একটু বিরক্তির সহিত বলিলেন—“ছিঃ। ও কাজ করিতে আছে মা! ইহাতে রুকিনা বিবির মনে খুবই একটা কষ্ট বোধ হইবে। খালি কষ্ট নয় আনারউন্নিসা, তিনি ইহাতে নিশ্চয়ই অপমানিতা বোধ

১২