পাতা:দেওয়ানা - হরিসাধন মুখোপাধ্যায়.pdf/১৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দেওয়ানা

 আনার যখন এইরূপ হৃদয় বিপ্লবকারী চিন্তায় মূহ্যমানা, সেই সময়ে নবাব সুজা বেগ, তাঁহার পত্নীর কক্ষ মধ্যে প্রবেশ করিয়া বলিলেন—“আনারউন্নিসা! তুমি এখন কেমন আছ?”

 অবনতমুখে আনার নিজের চিন্তাতেই বিভোরা ছিল। সহসা স্বামীর কণ্ঠস্বরে তাহার অর্দ্ধলুপ্ত চেতনা, যেন জাগরণের সীমায় ফিরিয়া আসিল। নবাব সুজা বেগ, যে তাহাকে এইমাত্র একটা কি প্রশ্ন করিলেন— তাহা সে ভালরূপ বুঝিতে পারে নাই। এইজন্য বিস্ময় বিহ্বল চিত্তে একবার মাত্র স্বামীর মুখের দিকে চাহিয়া, সে আবার মুখ অবনত করিল।

 নবাব সুজা বেগ, আনার চরিত্রের বৈচিত্রতা কি—এই কয় মাস ব্যাপী দাম্পত্য— জীবনেই ভালরূপ বুঝিয়া লইয়াছিলেন। সুতরাং সিদ্ধান্ত দ্বারা তিনি বুঝিলেন—“কাল রাত্রে আনারের সহিত দেখা না করায়, সে দারুণ অভিমানিনী হইয়াছে। তাই কথা কহিতেছে না।”

 তিনি পার্শ্বে বসিয়া, পত্নীর এলায়িত কুঞ্চিত কেশগুলি লইয়া নাড়া চাড়া করিতে লাগিলেন। আনার বলিল,— “আমার এমন কি হইয়াছে—যাহার জন্য তুমি এতটা ব্যাকুলভাবে আমার মুখের দিকে চাহিয়া আছ?”

 সুজা খঁ। বলিলেন—“কাল রাত্রে জুমেলির মুখে শুনিয়াছিলাম তোমার তবিয়ৎ ভাল ছিল না। তাই জিজ্ঞাসা করিতেছিলাম।”

 আনার। যদি আমার উপর তোমার এতই টান, তাহা লে অসুখের কথাটা শুনিবার পর একটু কষ্ট স্বীকার করিয়া

১৪৩