পাতা:দেওয়ানা - হরিসাধন মুখোপাধ্যায়.pdf/১৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দেওয়ানা

পালট করিয়া দেখিল। কিন্তু যে কাগজ কয়খানিতে তাহার খুব প্রয়োজন তাহা না পাওয়ায়, তাহার মুখখানা ক্রমশঃ চিস্তা মলিন হইয়া উঠিতেছিল।

 একবার, দুইবার তিনবার খুঁজিবার পর, সে একটী কারুকার্য্যময় লম্বা আকারের চাঁদীর আধারের মধ্যে, কয়েকখানি লোহিতবর্ণের কাগজ দেখিতে পাইল। সেগুলি খুলিয়া পড়িবামাত্রই, সে মহোল্লাসে চীৎকার করিয়া বলিয়া উঠিল— “ইয়ে মেরে খোদা মেহেরবান্! ধন্য তোমাকে! এইবার তুমি যাও কোথায় নবাব সুজা বেগ! এই পত্রের সহায়তায় আমি এক ঢিলে দুই পাখী মারিব। যে আনারউন্নিসা গর্বভরে আমার অপমান করিয়াছে, তাহার নবাব-পত্নী হওয়ার দর্পচূর্ণ করিব। তোমাকে তাহার বুক হইতে ছিনাইয়া লইয়া আমার গোলামের গোলাম করিব। শয়তান্! বিশ্বাসঘাতক! শয়তানী নারীর শক্তি যে কত বেশী, তাহা তুমি এখনও বুঝিতে পার নাই।”

 এমন সময় এক বান্দা আসিয়া সেলাম করিয়া তাহার সন্মুখে দাঁড়াইল। বাহার বলিল— “খবর কি বান্দা?”

 “নবাব সুজাখাঁর বাড়ী হইতে এক পত্র আসিয়াছে” বলিয়া সেই বান্দা এক খানি পত্র বাহার বানুর হাতে দিল।

 নবাব সুজাখাঁর নিকট হইতে পত্র আসিয়াছে শুনিয়া, বাহারবানু মনে ভাবিল, যে এইবার সাধাসাধির পালা আরম্ভ হইয়াছে। সুতরাং খুব একটা কৌতূহলবশে, সে পত্রখানি এক নিঃশ্বাসে পড়িয়া ফেলিল। পত্রখানি পড়া শেষ হইলে,

১৪৮