পাতা:দেওয়ানা - হরিসাধন মুখোপাধ্যায়.pdf/১৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দেওয়ানা

খানি ধরিয়া ফেলিল। তাহার উচ্ছ্বাসময় হৃদয়ে তখন মহা ঝটিকা উঠিয়াছে। এক হীনা স্বৈরিণীর নিকট, সে দীনার মত এই ভিক্ষা চাহিতেছে। সে আশা যদি পূর্ণ না হয়, তাহ হইলে তার অপমানের বাকী রহিল কি? বাহার বানুর “হাঁ ও না” এই দুটী কথার উপর তাহার ভবিষ্যৎ জীবনের সুখ-সম্পদ, আনন্দ উল্লাস সবই নির্ভর করিতেছে!

 বাহারবানু, আনারউন্নিসার এ অদ্ভুত অনুরোধে খুবই বিস্মিতা হইয়া পড়িয়াছিল। সে আনারের মনোভাব পরীক্ষার জন্য বলিল—“যদি আমি এ প্রস্তাবে স্বীকৃতা না হই?”

 আনার উন্নিসা বিস্মিতভাবে বাহারের মুখের দিকে চাহিয়া বলিল—“তাহাহইলে বুঝিব, রমণীরূপে তুমি রাক্ষসী। মূর্ত্তিময়ী শয়তানীরূপে তুমি আমার সর্ব্বনাশ করিতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।”

 বাহার বানু মনে মনে কিয়ৎক্ষণ ধরিয়া কি ভাবিয়া বলিল, “আমি না হয় আগরা ত্যাগ করিলাম। কিন্তু নবাব সুজাখাঁ আমার স্মৃতি ত্যাগ করিতে সক্ষম হইবেন কি?”

 আনারউন্নিসা বলিল — “তোমার কর্ত্তব্য তুমি কর। তার পর আমি বুঝিব, নবাব সুজাখাঁ তোমাকে ভুলিতে পারেন কি না? আমার পত্নীত্বের শক্তিতে আমি যদি তাঁহার মনে তোমার স্মৃতির বিস্মৃতি না ঘটাইতে পারি, তাহা হইলে তুমি প্রতিশ্রুতি মুক্ত। আমি আমার অদৃষ্টকে ধিক্কার দিয়াই নিশ্চিন্ত হইব।”

 বাহারবানু মনে মনে কি ভাবিতে লাগিল। আনার

১৫৩