পাতা:দেওয়ানা - হরিসাধন মুখোপাধ্যায়.pdf/১৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দেওয়ানা

 জুমেলি। নবাব এখানে নাই। তিনি আজমীরে গিয়াছেন। বোধ হয় দুই দিন ফিরিবেন না। আপনি আমার সঙ্গে আসুন। মীর লতিফ মনে মনে অনেক কথাই ভাবিতে লাগিল।

 অনেক দিনের কথা! সেই আনারউন্নিসা, সেই বাল্য ক্রীড়া, সেই দিবারাত্রব্যাপী সাহচর্য্যও আসক্তি—সেই আসক্তিতে প্রেমের মধুর বিকাশ। তার পর দারুণ নিরাশাময় যবনিকার পতনে, মিলনের পরিবর্ত্তে চিরদিনের বিরহ। হায়! সেই রূপসম্পদময়ী, স্নেহময়ী, সহাস্যমুখী, আনারউন্নিসাকে যে কত দিন দেখি নাই! দুঃখের দিনে যাহার দুঃখ কষ্টে দুঃখ ভোগ করিয়া আসিয়াছি, আজ তাহার সুখের দিনে—একটু আনন্দিত হইব না কেন? দেখায় একবার দোষ কি?

 সন্দেহে দোলায়মান চিত্ত, স্থির ভাব ধারণ করিল। প্রবৃত্তি দমনের শক্তি, দর্শনাকাঙ্ক্ষার প্রবল টানে শিথিল হইয়া গেল।

 মীর লতিফ একটী মর্ম্মভেদী দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিয়া বলিল “ভাল তাহাই হউক। তোমার বেগমকে গিয়া সংবাদ দাও।”


ঊনবিংশ পরিচ্ছেদ।

 জুমেলির মুখে সংবাদ পাইয়াই, আনারউন্নিসা, এক কক্ষ মধ্যে মীর লতিফের জন্য উৎকণ্ঠিত চিত্তে অপেক্ষা করিতেছিল। কক্ষ সন্ধ্য। সমাগমে পূর্ণভাবে দীপোজ্জ্বলিত। আর সেই মৃদুকম্পিত দীপ-শিখার মত তাহার হৃদয়ও দুরু দুরু কাঁপিতেছে।

১৬০