পাতা:দেওয়ানা - হরিসাধন মুখোপাধ্যায়.pdf/১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দেওয়ানা

আমার বহু দিনের সুখস্বপ্ন এই, যে তুমি আমার অঙ্ক লক্ষ্মী হইবে। বড়ই সাধে ভরা, আশার মোড়া, এই সোনার স্বপনচী আমার। এ স্বপন তুমি চূর্ণ করিয়া দিও না। তোমার সম্মতি পাইলে প্রত্যক্ষভাবে তোমার পিতার নিকট তোমার হস্ত প্রার্থনা করিব। এই পত্রের অনুকুল উত্তর আমার হাতে আসিলে আমার মাতা নিজে তোমাদের বাড়ীতে গিয়া সমস্ত কথা ঠিক করিয়া আসিবেন।—“সুজাবেগ।”

 জুমেলি অনুমানে কতকটা বুঝিয়াছিল, নবাব সুজা বেগের এই পত্রে সম্ভবতঃ কি লেখা থাকিতে পারে।

 আর সে একথাও ভাবিতেছিল, হয়ত পত্রখানা পড়িয়া আনরের মুখটা খুবই প্রফুল্ল হইয়া উঠিবে। কেন না, সে কাণাঘুষায় একটা খবর শুনিয়াছিল, যে সুজাবেগের মাতা রুকিনা বিবি আনারকে তাঁহার গৃহলক্ষ্মী করিতে খুবই উৎসুক।

 নবাব সুজা বেগের অতুল ঐশ্বর্যা। দেখিতেও তিনি কান্তিময়। মোগল রাজসরকারে তাহার খুবই প্রতিপত্তি। এই সুজা বেগের পত্নী হইলে, আনার রাজরাণীর মত আদরে থাকিবে, অতুল ঐশ্বর্য্যের অধিকারিণী হইবে, তাহার নারী জন্মের সকল সাধ মিটিবে, এইরূপ সুখস্বপ্ন এক এক সময়ে তাহার অবসন্ন মনটাকে খুবই আলোকময় করিয়া তুলিত।

 পূর্ব্বরাত্রে সুজা বেগ আনারকে যে বহুমূল্য কণ্ঠার উপহার দিয়াছিলেন, তাহা যে এই মিলনের পূর্ব্বরাগ—সুন্দরীশ্রেষ্ঠা আনারের হস্ত প্রার্থনার প্রথম অভিজ্ঞান, তাহাও সে ধরিয়া

১৫