পাতা:দেওয়ানা - হরিসাধন মুখোপাধ্যায়.pdf/১৭৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দেওয়ানা

একটু কষ্টে কাটিবে। কিন্তু সে কষ্টেও আমার জীবনে—সুখ। কেন না তুমি শাহজাদার নিকট প্রতিশ্রুতিমুক্ত হইবে। তুমি একটু অপেক্ষা কর। আমি একটা কাজ সারিয়া আসিতেছি।”

 এই কথা বলিয়া আনার দ্রুতপদে নিজের কক্ষে চলিয়া গেল। রত্নালঙ্কারপূর্ণ ক্ষুদ্র পেটিকা একটী বাহির করিয়া, নিজের গায়ের সমস্ত অলঙ্কার গুলি খুলিয়া ক্ষিপ্রহস্তে তাহা সাজাইয়া ফেলিল। আর নবাব সুজাখাঁর জন্মতিথির দিনে সে যে বহুমূল্য হার রুখিনা বিবির নিকট উপহার পাইয়াছিল, ও যে লক্ষটাকা মূল্যের হীরক হার, বিবাহের পর নবাব সুজাখাঁ তাহাকে প্রেমোপহাররূপে দিয়াছিলেন তাহাও লইয়া নবাব সুজা বেগের সম্মুখে ধরিয়া দিল।

 নবাব সুজাবেগ কিরৎক্ষণ বিস্মিতনেত্রে আনারের মুখের দিকে চাহিয়া থাকিয়া বলিলেন—“এ সব রত্নালঙ্কার লইয়া আমি কি করিব আনারউন্নিসা?”

 আনার উন্নিসা। এগুলি বিক্রয় করিয়া তুমি শাহাজাদার নিকট ঋণমুক্ত হও, প্রতিশ্রুতি মুক্ত হও। আমার অলঙ্কার পরা ত তোমার চিত্ত তুষ্টির জন্য। আর এ সব অলঙ্কার তোমারই ত দেওয়া। সময় হয়, আবার করিয়া দিবে। নবাব! কখনও এ বাঁদী তোমার কাছে মুখ ফুটিয়া কোন কিছু প্রার্থনা করে নাই। আজ তোমার কাছে এই সামান্য প্রার্থনা করিতেছে। আমার এ ক্ষুদ্র আশা পূর্ণ কর।” জনাব! মেহের বান! এ বাঁদীর মুখের দিকে চাও।”

 এই কথা বলিয়া আনার উন্নিসা, সুজাখাঁর পদপ্রান্তে বসিয়া পড়িল। তাহার গণ্ডদেশে অশ্রুধারা। নবাব সুজাখাঁ সে করুণ দৃশ্য

১৭১