পাতা:দেওয়ানা - হরিসাধন মুখোপাধ্যায়.pdf/১৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

একবিংশ পরিচ্ছেদ।

 মানুষ যখন দুঃসময়ের পীড়নে চারি দিক হইতে বিপদাক্রান্ত হয়, তখন সে একেবারে দিশাহারা হইয়া পড়ে। ব্যূহমধ্যস্থ যোদ্ধা, যেমন চারি দিক হইতে শত্রুর শরজালে আক্রান্ত হইয়া ক্ষত বিক্ষত হইয়া পড়েন, নবাব সুজাখাঁর অবস্থাও ঠিক সেইরূপ।

 শাহজাদাকে যে কয়েক লক্ষ মুদ্রা প্রদান করিতে হইবে, তাহার একটা উপায় আপাততঃ হইল বটে, কিন্তু তার চেয়েও আরও একটা ভয়ানক চিন্তা, নবাবের হৃদয়কে ক্রমাগতঃ অঙ্কুশ বিদ্ধ করিতেছিল। সেটা বাহারবানুর সেই সাংঘাতিক পত্র।

 নবাব সুজাখাঁ সেই পত্রখানি আবার পড়িলেন। পত্রে লেখা ছিল—“আমার নিয়োজিত চর আমায় সংবাদ দিয়াছে, যে তুমি গত রাত্রে বাটী ফিরিয়াছ। আজ সন্ধ্যার পর আরামবাগে আসিতেই চাও। আজ আমাদের মধ্যে দেনা-পাওনার হিসাব পরিষ্কার হইবে। যদি না আস, তাহা হইলে, কাল প্রভাতেই তোমার গোপনীয় পত্রগুলি শাহজাদা দারার হাতে গিয়া পড়িবে। এই হিসাব নিকাশের মূল পণ, তোমার পত্নী আনার উন্নিসা বেগমের বহুমূল্য রত্নহার। তাহার বিনিময়ে আমি এই গোপনীয় পত্রগুলি তোমায় প্রত্যর্পণ করিতে প্রস্তুত।—“বাহারবানু।”

 সুজাখাঁ এই পত্রখানি দুই তিনবার পড়িলেন। তাঁহার মুখমণ্ডলে ভয়ানক একটা উত্তেজনা দেখা দিল। তিনি পত্রখানি

১৭৩