পাতা:দেওয়ানা - হরিসাধন মুখোপাধ্যায়.pdf/১৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দেওয়ানা

বাগের পথ ধরিলেন। যতক্ষণ দেখা যায়, আনারউন্নিসা একদৃষ্টে বাতায়ন পথ দিয়া তাঁহার দ্রুতগামী যানের দিকে চাহিয়া রহিল। তার পর এক মর্ম্মভেদী দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিয়া সে বলিয়া উঠিল— “খোদা তোমাকে সহস্র বিপদ হইতে রক্ষা করুন! হায়! জানি না—আজ তোমাকে বিদায় দিয়া আমার প্রাণের ভিতর কাঁদিয়া উঠিতেছে কেন? কি যেন একটা বিপদের ছায়া, চোখের সম্মুখে বিভীষিকা বিস্তার করিতেছে কেন?

 যথাসময়ে সুজাখাঁ আরামবাগে আসিয়া পৌঁছিলেন। নবাব যখন এখানে সর্ব্বদা বাস করিতেন— তখন অনেক বান্দা ও বাঁদী এ বাগানে থাকিত। এখন কেবল দুইজন পুরীরক্ষক আরামবাগের হেপাজতে আছে। তাহারা জানিত, যে নবাব সন্ধ্যার পর আরামবাগে আসিবেন, সুতরাং তাহারা সন্ধ্যার সময়েই তাঁহার বসিবার কক্ষটী দীপোজ্জ্বলিত করিয়া রাখিয়াছিল।

 রাত্রি প্রথম প্রহর উত্তীর্ণ হইল। এই এক প্রহরব্যাপী কাল, নবাব চিন্তায় কাটাইয়া দিলেন। তাঁহার তখনকার চিন্তা, আনারের এই বহুমূল্য রত্নহার না দিয়া কি উপায়ে সেই শয়তানীর নিকট হইতে পূর্ব্বোক্ত সাংঘাতিক পত্রগুলি কৌশলে সংগ্রহ করা যায়।

 দীর্ঘকালব্যাপী চিন্তায়, একটা অবসন্ন ভাব দেখা দিল। এ অবসন্ন ভাবটীকে বিদূরিত করিবার জন্য, নবাব সুজা বেগ এক পত্র সেরাজি পান করিলেন।

১৭৫