পাতা:দেওয়ানা - হরিসাধন মুখোপাধ্যায়.pdf/১৭৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দেওয়ানা

 বাহারবানু এ কথায় রাগিয়া উঠিয়া বলিল,—“দোষ কি একা আমার নবাব! আমিই কি উপযাচিকা হইয়া দীনার মতন তোমার কাছে প্রেমভিক্ষা করিতে গিয়াছিলাম। মনে পড়ে কি তোমার সেই প্রতিশ্রুতির কথা,—যে তুমি আমাকে ভবিষ্যতে তোমার ধর্ম্ম পত্নী করিবে? তোমার অতুল ঐশ্বর্য্যের একাধিশ্বরী হইয়া, আমি আবার অভিজাত-সমাজে বরণীয় হইব? ভাগ্য পরীক্ষার্থে আমি এ হিন্দুস্থানে আসিয়াছি। আমার ভাগ্য তোমার রূপা ও করুণার চরণতলে সঁপিয়া দিয়াছিলাম। অতি নিষ্ঠুরের মত আমার সে ভাগা তুমি পদদলিত করিয়াছ। তোমার পত্নী আনারউন্নিসা দুই দুইবার আমাকে অপমান করিয়া তাড়াইয়া দিয়াছে। সিরিয়ান আরমানী আমরা। অতি উষ্ণরক্ত আমাদের শিরায় ধমনীতে। অপমানের প্রতিশোধ কি করিয়া লইতে হয়, তা আমরা জানি। তুমি নিজেই তো আমার সহিত সকল সম্পর্ক লোপ করিয়াছ। কে তুমি—আমার নবাব সুজা বেগ? যে তোমার জন্য আমি এতটা সহিব?”

 বড়ই প্রখর জ্বালাময় শ্লেষ! সুজাবেগ এক ঘৃণিতা স্বৈরিণীর এ প্রগল্‌ভতা সহিতে পারিলেন না। তাঁহার এক এক সময়ে মনে হইতেছিল, যে একটী পদাঘাতে এই ধৃষ্টা স্বৈরিণীকে আরামবাগ হইতে দূর করিয়া দেন। কিন্তু সে প্রবৃত্তি দমন করিয়া তিনি আর এক পাত্র সেরাজি পান করিলেন। তৎপরে কঠোর স্বরে বলিলেন,—“আমার সেই পত্র গুলি আনিয়াছ?”

 বাহারবানু বলিল—“নিশ্চয়ই!”

১৭৭