পাতা:দেওয়ানা - হরিসাধন মুখোপাধ্যায়.pdf/১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দেওয়ানা

লইয়াছিল। কিন্তু যখন দেখিল, যে তাহার প্রিয় সখীর মুখখানা সুজা বেগের পত্র পড়িয়া হর্ষোৎফুল্ল না হইয়া, খুবই মলিন হইয়া গেল—তখন সে বড়ই ভাবিত হইল।

 জুমেলি কিয়ৎক্ষণ তাহার সখীর মুখের দিকে স্থির ভাবে চাহিয়া থাকিয়া, সন্দিগ্ধ স্বরে বলিল— “তোমার মুখখানা অত মলিন হইয়া গেল কেন? তাহা হইলে পত্রে কি কোন দুঃসংবাদ আছে না কি?”

 আনার বলিল— “অন্ততঃ অন্যের পক্ষে দুঃসংবাদ না হইতে পারে। কিন্তু আমার পক্ষে এই চিঠি খানা খুবই কুসংবাদ বহন করিয়া আনিয়াছে। পত্রখানা পড়িয়া দেখ না তুমি জুমেলি! তাহা হইলেই হয়ত সব কথা বুঝিতে পারিবে।”

 জুমেলী পত্রখানি পড়িয়া বুঝিল—তাহাতে এমন কোন সাংঘাতিক বা অশুভ ঘটনার সংবাদ নাই, যাহা পড়িয়া আনারের মুখখানা মলিন হইয়া পড়িতে পারে। কিংবা একটা দুশ্চিন্তা আসিয়া, তাহার হৃদয়কে অন্ধকারময় করিয়া দিতে পারে।

 পত্রখানি পড়িয়া ভালমন্দ কিছুই না বলিয়া, জুমেলি কেবল মাত্র বলিল,—“বিবাহ হইলে পিতার স্নেহময় ক্রোড় হইতে দূরে যাইতে হইবে, সেই জন্যই বোধ হয় তোমার মনটা খুবই চঞ্চল হইয়াছে। এ বিষয়ের সম্বন্ধে চুড়ান্ত মীমাংসা তোমার পিতার হাতে। তিনি যে হুকুম করিবেন, তাহা তোমাকে নিশ্চয়ই মানিয়া চলিতে হইবে।” আর বেশী কিছু না বলিয়া জুমেলি অন্য কাজে চলিয়া গেল।

১৬