সুজা। কি পণে এ পত্রগুলি আমায় তুমি ফিরাইয়া দিতে পার?
বাহার। তোমার পত্নীর লক্ষ টাকা মূল্যের কণ্ঠহার!
সুজা। যদি তাহা না দিই!
বাহার। তাহা হইলে তোমার লিখিত এই পত্রগুলি শাহজাদা দারা শেকোর নিকট আজই পৌঁছিবে। তুমি বোধ হয় ভুলিয়া গিয়াছ, যে এই পত্রগুলি তুমি শাহজাদা ঔরঙ্গজেবকে লিখিয়াছিলে, কিন্তু নানা কারণে তাহা পাঠাইবার সুযোগ পাও নাই।
সুজা। আমি যে এ সব পত্র লিখিয়াছিলাম তাহার প্রমাণ?
বাহার। প্রমাণ —তোমার নিজের হস্তাক্ষর। তোমার নামের মোহর। ভুলিয়া গিয়াছ কি তুমি নবাব! যে এই সব পত্র লেখার সাক্ষী আমি।
সুজা খাঁ দেখিলেন, যে কোন প্রকারে হউক এই সাংঘাতিক পত্রগুলি সংগ্রহ করা বই আর কোন উপায় নাই। এই শয়তানী তাঁহাকে চক্রান্তের বেড়াজালে ফেলিয়া—পিসিয়া মারিবার চেষ্টা করিতেছে। সামান্যা এক রমণীর বুদ্ধির নিকট এ শোচনীয় পরাজয়, যেন তাঁহার বুকে শেল বিধিতে লাগিল। তিনি আবার পাত্রটি পূর্ণ করিয়া মদিরা পান করিলেন। তৎপরে বলিলেন, “ভাল! তোমার এ কঠোর পণেই আমি স্বীকৃত। এই লও রত্নহার! কিন্তু পত্রগুলি আগে আমাকে দাও।”
নবাব সুজাবেগ রত্নহারের আধারটী খুলিয়া, বাহারবানুর সম্মুখে ধরিলেন। সমুজ্জ্বল দীপালোকে সেই স্বর্ণগ্রথিত বহুমূল্য