পাতা:দেওয়ানা - হরিসাধন মুখোপাধ্যায়.pdf/১৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দেওয়ানা

হারের হীরাগুলি দপ দপ করিয়া জ্বলিতে লাগিল। অলঙ্কারলুব্ধ স্বৈরিণী ভাবিয়া দেখিল, এই বহুমূল্য রত্নহারের বিনিময়ে সে নবাবের পত্রগুলি ফিরাইয়া দিতে খুবই প্রস্তুত।

 প্রফুল্লমুখে, সে তাহার বক্ষবসনের মধ্য হইতে পত্রগুলি বাহির করিয়া নবাবের সম্মুখে ধরিল। বলিল—“এক হাতে এ পত্রগুলি নাও, অপর হাতে আমাকে ঐ রত্নহারটী দাও।”

 সুজাবেগ রত্নহারটী বাহারবানুর সম্মুখে অগ্রসর করিয়া দিয়া তাহার নিকট হইতে পূর্ব্বোক্ত পত্রগুলি লইলেন। সে পত্রগুলি পড়িয়া তাঁহার মাথা ঘুরিয়া উঠিল। তিনি আবার এক পাত্র সেরাজ়ি পান করিয়া, সেই সাংঘাতিক পত্রগুলি তাঁহার বক্ষবসনের মধ্যে লুকাইয়া ফেলিলেন।

 এই সময়ে শয়তান আসিয়া তাঁহার স্কন্ধে চাপিল। নবাব সুজাবেগ ভাবিলেন, এই কক্ষ নির্জ্জন। কেহই এখানে নাই। সামান্য এক রমণী আমাকে এই ভাবে লাঞ্ছিত করিয়া পলাইবে? ছিঃ—কি ঘৃণা! কি—লজ্জা! আমার প্রিয়তমা পত্নীর পবিত্র কণ্ঠহার কিনা এই কলঙ্কিতা স্বৈরিণীর ভোগ্য হইবে?”

 শয়তান তাঁহার কাণে কাণে বলিল “পত্রগুলি তোমার হস্তগত। ঐ শয়তানীকে এখনই তুমি হত্যা কর। উহার মৃতদেহ আরামবাগের তয়খানার মধ্যে পুতিয়া ফেল। অতি সহজেই তোমার কার্য্য সিদ্ধি হইবে।”

 শয়তানের এই উপদেশ, তখন তাঁহার মনে খুবই বসিয়া গেল। বাহারবানু সেই রত্নহার লইয়া সহাস্য মুখে বলিল—“বন্দেগি

১৭৯