পাতা:দেওয়ানা - হরিসাধন মুখোপাধ্যায়.pdf/১৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দেওয়ানা

সরিয়া আসিয়া বজ্রগম্ভীর কণ্ঠে বলিল, “না—আমি নবাব সুজা খাঁ নই। আমি তোর যম!”

 সেই মূর্ত্তির আপাদমস্তক বস্ত্রাবৃত। জড়িতস্বরে, কম্পিত হৃদয়ে বাহারবানু বলিল,—“সত্যই তুমি কি আমায় হত্যা করিতে আসিয়াছ?”

 আগন্তুক। হাঁ—

 বাহার। আমি তোমার কি করিয়াছি?

 আগন্তুক। তাহা বলিতে আমি বাধ্য নই। শয়তানী! মৃত্যু—তোর সম্মুখে! নবাব সুজাখাঁর হত্যাকারীকে শাস্তি দিবার জন্য খোদা আমাকে এখানে পাঠাইয়াছেন।

 বাহার। কে বলিল —যে আমি নবাব সুজাখাঁকে হত্যা করিয়াছি? মিথ্যা কথা তোমার! তুমি দস্যু! এই বহু মূল্য রত্নহারের লোভে তুমি আমার অনুসরণ করিয়াছ।

 আগন্তুক তখনই বাহারের সম্মুখে রক্ষিত, শোণিতাক্ত ছুরিকা খানি তুলিয়া বলিল—“শয়তানী! মৃত্যু তোর সম্মুখে! তবুও মিথ্যা কথা বলিতেছিস্ তুই! এই ছুরিকার গাত্রলিপ্ত শোণিত কলঙ্ক, যে নবাব সুজা খাঁর হৃদয়ের শোণিত! অই সমুজ্জ্বল হীরক-হারের উপর অতি ক্ষুদ্র লোহিত শোণিত বিন্দু, যে নবাব সুজাখাঁর হৃদয়ের শোণিত! তোকে আর বেশী বাঁচিয়া থাকিতে দিলে খোদার রাজত্বে একটী ভীষণ বিপ্লব ঘটিবে। তোর জীবনের শেষ মুহুর্তে একবার সেই করুণাময় খোদাকে স্মরণ কর।”

 বাহারবাহু বুঝিল,—ব্যাপার সহজ নয়। সে তখনই

১৮৫