আমি নবাব সুজাখাঁকে হত্যা করিয়া ত তোমার প্রেমের পথের কণ্টক মুক্ত করিয়া দিয়াছি। আমার এই কর্ম্মের ফলে এখনত সেই দর্পিত আনার উন্নিসা তোমার।”
“আনারের জার” এ অপবাদ মীর লতিফ সহ্য করিতে পারিল না। সে তখনই উন্মাদের মত বিকট দৃষ্টিতে বাহারের সম্মুখস্থ সেই বিষাক্ত ছুরিকাখানি তুলিয়া লইয়া, তাহার বক্ষে আমূল বিদ্ধ করিল!
আঘাত অতি সাংঘাতিক। সেই আঘাতেই বাহারবানু মরিল। তাহার মুখের শেষ কথা—“খো—দা—পা—পে—র প্রা—য়—শ্চি—ত্ত। চ—র—ণে—স্থা—ন—”
এ ভীষণ মৃত্যু দেখিয়া, মীর লতিফ একটুও কাঁপিল না। টলিল না। সেই মৃতদেহ টানিয়া লইয়া পার্শ্বের এক ক্ষুদ্র কক্ষে ফেলিয়া দিয়া তাহার দ্বারে চাবি দিল। তার পর বাহারের সেই হৃদয়শোণিতে কলঙ্কিত ছুরিকা ও হীরকহার লইয়া, পুরীর বাহিরে চলিয়া গেল।
চতুর্ব্বিংশ পরিচ্ছেদ।
প্রভাতের পূর্ব্বে নবাব সুজা বেগের চৈতন্য হইল। দেহের তাপ যেন অনেকটা কমিয়া গিয়াছে। বোধ হয় জ্বর ছাড়িয়া আসিতেছে।
নবাব ক্ষীণ স্বরে বলিলেন,— “আমি কোথায়?”