পাতা:দেওয়ানা - হরিসাধন মুখোপাধ্যায়.pdf/২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দেওয়ানা

 কথাগুলি সম্পূর্ণ সত্য। একবার এই আনার উন্নিসার অতি কঠিন পীড়া হইয়াছিল। তাহার শরীরে তিলমাত্র রক্তকণা ছিল না। হকিম যখন বলিলেন,—“অন্য সুস্থদেহ হইতে শোণিত লইয়া এই রোগীর দেহে প্রবেশ না করাইলে এ বাঁচিবে না,— তখন এই মীর লতিফই যে প্রফুল্লমুখে, নির্ভীক হৃদয়ে, তাহার দক্ষিণ বাহু খানি প্রসারিত করিয়া দিয়া আসন্ন মৃত্যুকবলগত আনারের জীবন রক্ষা করিয়াছিল। আর ইহার অনেক পূর্ব্বে একদিন স্থানান্তরে কোন আত্মীয়গৃহে নিমন্ত্রণ যাইবার সময়ে, সহসা ঝড় উঠায় যমুনার স্রোেত যখন নৌকা উল‍্টাইয়া দিয়াছিল, তখন এই মীর লতিফই নিজের জীবন বিপন্ন করিয়া আনারকে বুকে করিয়া তুলিয়া লইয়া, নদীর পর পারে পৌঁছিয়া দিয়া তাহার জীবন রক্ষা করে। অথচ তিনি পিতা হইয়াও আনারকে ত্যাগ করিয়া নিজের বিপন্ন জীবন রক্ষার জন্য ব্যতিব্যস্ত হইয়া পড়িয়াছিলেন। আর এই ভীষণ ঘটনার ফলে এই লতিফ্ যখন একমাস কাল কঠিন রোগে শয্যায় আবদ্ধ হইয়াছিল, তখন তিনি নিজে ও তাঁহার কন্যা আনার উন্নিসা, দিন রাত খাটিয়া রোগীর সেবা শুশ্রূষা করিয়া, কত কষ্টে এই রোগীকে বাঁচান, তাঁহাও তাহার চোখের সম্মুখে যেন পূর্ব্ব দিবসের কোন ঘটনার মত ফুটিয়া উঠিল।

 কিয়ৎক্ষণ ধরিয়া কি ভাবিয়া, জামাল খাঁ তাঁহার কন্যা আনার উন্নিসাকে বলিলেন, “ভাল তোমার ও আমার পত্রের উত্তর আমিই দিব। এই বিবাহ প্রস্তাবের একটা সূক্ষ্ম মীমাংসার

১৯