পাতা:দেওয়ানা - হরিসাধন মুখোপাধ্যায়.pdf/৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দেওয়ানা

কেন না তিনি খুব ভাল রূপই জানিতেন, এ বিবাহ ঘটাইবার জন্য রুকিনা বিবিরই খুব আন্তরিক আগ্রহ ও চেষ্টা ছিল।

 মাতার মৃত্যুর পর, সুজাবেগ অপরিমেয় সম্পত্তির স্বাধীন অধিকারী হইলেন। যমুনার পর পারে, আগরা হইতে তিন চারি ক্রোশ দূরে, “আরাম-মঞ্জিল” বলিয়া তাঁহার এক প্রকাণ্ড উদ্যান বাটী ছিল, মাতার মৃত্যুর পর, তিনি সহর ছাড়িয়া এই “আরাম-মঞ্জিলেই” বাস করিতে লাগিলেন।

 সুজাবেগের স্বভাব চরিত্র বড় ভাল ছিল না। রুকিনা বিবি—অর্থাৎ তাঁহার মাতা, যে তাঁহার কতক কতক জানিতেন না—তাহাও নয়। আর সুজার এই নষ্ট চরিত্রের কথা লইয়া তাহার সমাবস্থাসম্পন্ন প্রবীণ আমীর-ওমরাহদের মধ্যে যে একটা কাণাঘুসা ও গল্প গুজব হইত না, তাহাও নহে। তাহাদের মধ্যে দুই চারি- জনের বিবাহযোগ্যা পরমাসুন্দরী কন্যা ছিল, কিন্তু সুজাবেগের চরিত্র সম্বন্ধে গূ্হ্য কথাগুলি তাঁহারা জানিতেন বলিয়া, রুকিনা বিবি বহুবার তাঁহাদের কন্যার সহিত তাঁহার পুত্রের বিবাহের প্রস্তাব করিলেও, তাঁহারা একটা না একটা সঙ্গত ওজর দেখাইয়া, সে প্রস্তাবটা উড়াইয়া দিয়াছিলেন।

 কোন বড় ঘরানার সহিত, বৈবাহিক সম্বন্ধ স্থাপনে এই ভাবে অকৃতকার্য্য হওয়াতেই, রুকিনা বিবি তাঁহার অপেক্ষা ধনে মানে অপেক্ষাকৃত নীচু ঘরে, পুত্রের জন্য সুপাত্রী খুঁজিতে লাগিলেন। অনেকের কন্যাকেই তিনি দেখিলেন—কিন্তু সকলের সঙ্গে তুলনায়,রূপেগুণে শ্রেষ্ঠা এই আনারউন্নিসাকেই তাঁহার পছন্দ

২৮