পাতা:দেওয়ানা - হরিসাধন মুখোপাধ্যায়.pdf/৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দেওয়ানা

জামাল খাঁকেও সেই দিন এক পত্র লিখিয়াছিলেন। কিন্তু তারপর এ সম্বন্ধে কোন উচ্চবাচ্য নাই দেখিয়া, জামাল খাঁ মনে যেন একটা শান্তি অনুভব করিলেন। ঐশ্বর্যে্যর বিনিময়ে তিনি তাঁহার কন্যাকে এক চরিত্রহীনের হস্তে অর্পণ করিতে বড়ই নারাজ। তবে ভবিতব্য যদি সুজা বেগের সহিত তাঁহার কন্যার ভাগ্য বিজড়িত করিয়া দেয়, তাহা হইলে তিনি কোনরূপে বাধা দিতে সক্ষম নহেন। কেই বা কবে দিতে পারিয়াছে?

 সুজাবেগের প্রকৃত স্বভাব কিরূপ, তাহা দেখিতে হইলে— একবার আমাদের আরাম-মঞ্জিলে প্রবেশ করিতে হইবে।

 সন্ধ্যা উত্তীর্ণ হইয়া গিয়াছে। তাঁহার প্রকাণ্ড উদ্যান বাটীর কয়েকটী কক্ষ—— দীপোজ্জলিত। নবাব সুজাবেগ, উৎসুক চিত্তে যেন কাহারও আগমন প্রতীক্ষা করিতেছেন। কিন্তু—যাহার আশা প্রতীক্ষায় তিনি বসিয়া আছেন— সে ত আসিতেছে না।

 সহসা সেই কক্ষের দ্বার খুলিয়া গেল। এক পরমা সুন্দরী যুবতী, সহাস্যমুখে সেই কক্ষমধ্যে প্রবেশ করিয়া, একটু আদব কায়দার সহিত কুর্ণীশ করিয়। বলিল—“আরজ বন্দেগি! নবাবসাহেব! বাদী হাজির।”

 নবাব সুজাবেগ—কৃত্রিম কোপের সহিত বলিলেন—“ছিঃ! ছিঃ! এত নিষ্ঠুর তুমি? এত দেরী করিতে হয়? আমি যে কতই ভাবিতেছি!”

 সেই যুবতী, নবাবের পার্শ্বের এক সোফা অধিকার করিয়া বসিয়া, সুরমারঞ্জিত চোখে একটা শাণিত কটাক্ষ হানিয়া

৩০