পাতা:দেওয়ানা - হরিসাধন মুখোপাধ্যায়.pdf/৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দেওয়ানা

বলিল—“এত দূর! এখনও আমার জন্য এত ভাবনা! এর পর সুন্দরী আনার উন্নিসা, তোমার মহল আলো করিয়া বসিলে, হয়তঃ এ বাদীকে তোমার মনেই থাকিবে না।”

 নবাব সুজাবেগ,— তাঁহার প্রণয়িনীকে কোমল আলিঙ্গন নিপীড়িত করিয়া বলিলেন—“ও সব রহস্য এখন থাক্। বানু! এত দেরী করিলে কেন বল দেখি? বোধ হয় আজ তোমার প্রাণের অতি অন্তরঙ্গ সেই আমীরউদ্দৌলার সম্বর্ধনায় খুব ব্যস্ত ছিলে।

 বাহার বানু মৃদু হাস্যের সহিত বলিল— “আবার সেই কথা। আমাকে জ্বালাইলেই কি তুমি সুখী হও! আচ্ছা তুমি সুখে থাক। আমি চলিলাম।”

 এই কথা বলিয়া বাহারবানু দ্বারের কাছে সরিয়া আসিয়া দাঁড়াইল। তাহার আরক্ত ঠোঁঠ দুখানি অভিমানে ফুলিয়া উঠিল। সে যেন চলিয়া যাইতে উদ্যত।

 খাঁসাহেব মনে মনে বুঝিলেন, কথাটা বলিয়া তিনি ভাল কাজ করেন নাই। সুতরাং তিনি বাহারের হাতখানি ধরিয়া টানিয়া আনিয়। কাছে বসাইয়া বলিলেন——“ঐ কথা বলিলে তুমি খুব রাগিয়া যাও, তাই বলিয়াছি।

 বাহারের অভিমান ভাঙ্গিয়া গেল। সে দাঁড়াইয়া উঠিয়া বলিল—“ওঃ! কি ভয়ানক কন‍্কনে ঠাণ্ডা রাত‍্টা আজ নবাব সাহেব! দাও— দাও। একটু সেরাজি দাও। আগে জান্‌টা সতেজ হউক, তারপর যত পার রহস্য করিও।”

 নবাব সুজা বেগ, স্বহস্তে গুলাববাসিত সেরাজি ঢালিয়া

৩১