সুজা। কে বলিল? মিথ্যা কথা!
বাহার। কখনই না। যে বলিয়াছে,— সে তোমার ভাবী পত্নীর পিতা, জামাল খাঁর একজন অন্তরঙ্গ বন্ধু! তুমি বিবাহ করিবার জন্য এতই ব্যস্ত, যে শীলতার নিয়ম না মানিয়া তাহার কন্যা, আনার উন্নিসাকে নাকি প্রেমপত্র পর্য্যন্ত লিখিয়াছ।
সুজাবেগ কথাটা উড়াইয়া দিবার জন্য, উচ্চৈঃস্বরে হাসিয়া উঠিলেন। তারপর বাহারবানুর মুখখানি নিজের বুকের উপর টানিয়া লইয়া সহাস্য মুখে বলিলেন,—“এই ব্যাপার! বড়ই দুঃখের বিষয়, যে তুমি দেড়মাস পূর্ব্বের একটা খুব পুরাণ সংবাদ, যাহা এখন অলীকে দাঁড়াইয়াছে, তাহা লইয়া আমার সহিত আজ বিবাদ করিতে আসিয়াছ।”
বাহারবানু বলিল— “সংবাদটা অবশ্য পুরাতন। কিন্তু বোধ হয় তোমার জননী যদি ইহলোক ত্যাগ না করিতেন, তাহা হইলে হয়তঃ জামাল বেগের কন্যা, সুন্দরী শ্রেষ্ঠা আনার উন্নিসার হুকূমে, আজ আমার এই পুরী প্রবেশ করা বন্ধ হইয়া যাইত। তা তুমি যা ভাল বুঝিবে,—তাই করিবে। আমি তোমার আশ্রিতা দাসী বই আর কিছুই নই। লোকে আদর করিয়া টাট্কা ফুল, বুকের উপর গুঁজিয়া রাখে। ফুল বাসি হইলে তাহাকে বুক হইতে টানিয়া লইয়া দূরে ফেলিয়া দিয়া পদদলিত করে। তুমি এখন দেখিতেছি, সেই নীতির অনুসরণ করিতেছ! বল দেখি, কার আশায় আজও আমি বুক বাঁধিয়া চলিতেছি? সেই প্রথম মিলনের দিনে, তুমি আমার অঙ্গ স্পর্শ করিয়া কি
৩৪