পাতা:দেওয়ানা - হরিসাধন মুখোপাধ্যায়.pdf/৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দেওয়ানা

স্নিগ্ধ স্রোতস্বিনী তুমি! ছিঃ—আমার গভীর প্রেমে অতটা সন্দেহ করিও না! একটা সামান্য বিষয়ে কেন তোমায় স্পর্শ করিয়া শপথ করিতে যাইব— যাহা করিতে আমার এ চিত্ত স্বাধীন ইচ্ছায় সম্পূর্ণ শক্তিবান। আমার কথার উপর কি তোমার একটুও বিশ্বাস নাই বাহারবানু?”

 একটা ব্যাকুলতাময় আগ্রহের সহিত বাহারের মুখের দিকে চাহিয়া, এমনভাবে সুজা বেগ এই কথাগুলি বলিলেন—“যে বাহারবানুর মনে একটা ধারণা জন্মিল, এগুলি সত্য সত্যই নবাব সাহেবের মনের কথা।

 বাহার আর এক পাত্র সেরাজি ঢালিয়া, নবাব সুজা বেগের হাতে দিল। নিজেও এক পাত্র পান করিয়া প্রফুল্ল মুখে বলিল—“তবে নবাব সাহেব! আজ এ বাদী বিদায় পাইতে পারে কি? রাত খুব বেশী হইয়া পড়িয়াছে।”

 আগে আগে নবাব সুজা বেগ এই রূপসী বাহারবানুর সাহচর্য্যে খুবই একটা আনন্দ পাইতেন। কিন্তু এখন যেন সেরূপ আনন্দ আর পান না। এই বাহারের সাহচর্যে কত দিন, কত রাত, অবিচ্ছিন্নভাবে প্রেমলীলায় কাটিয়া গিয়াছে। তবুও তাহাতে বিরক্তি দেখা দেয় নাই। আগে এক মুহুর্ত্তের বিরহ বড়ই কষ্টকর বোধ হইত। এখন ত আর সেই আগ্রহময় ব্যাকুল ভাবটা নাই। এখন বেশীক্ষণ বাহারবানুর সঙ্গে থাকিতে হইলে যেন তাঁহার অতি কষ্টকর বলিয়া বোধ হয়। এখন যেন দীর্ঘ বিরহে একটু তৃপ্তি ও শাস্তি বোধ হয়।

৩৭