পাতা:দেওয়ানা - হরিসাধন মুখোপাধ্যায়.pdf/৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দেওয়ানা

 তাঁহার পিতা নিজাম মালি বেগ, বাদশাহ জাগঙ্গীরের মুর্কিন বা বাদশাহী রত্নবণিক ছিলেন। এরূপ শোনা যায়, নুরজাহান বেগম তাঁহার বহুমূল্য রাজমুকুটের শোভা স্বরূপ অতি সমুজ্জ্বল যে হীরকখানি ব্যবহার করিতেন— তাহা এই মুকিম নিজাম আলির প্রদত্ত উপহার।

 বৎসর দুই হইল · নিজাম আলির দেহ কবরস্থ হইয়াছে। সুজা আলিই এখন তাহার পরিত্যক্ত সম্পত্তি, কারবার ও উপাধির মালেক। বাদশাহের তিনি বড়ই পেয়ারের মুকিম।

 এই উৎসবালোক সুজা আলির জন্ম দিনের। তাঁহার জননী এখন জীবিতা। সুতগং তাঁহার স্বামীর আমল হইতে যে উৎসবটা চলিয়া আসিতেছে. সুজার জননী রুকিনা বেগম, তাহা বন্ধ না করিয়া পূর্ব্বের মত সবই বজায় রাখিয়াছিলেন। কেন না—এই সুজাই তাঁহার একমাত্র পুত্র।

 নির্দ্দিষ্ট সংখ্যক নিকটস্থ আত্মীয় প্রতিবাসীগণই, এই উৎসব ব্যাপারে আমন্ত্রিত হইতেন। এই উৎসবের একটা বিশেষত্ব এই-—খানা পিনা, আমোদ, অংহ্লাদ, আদব আপ্যায়ন ছাড়া, প্রত্যেক সমাগত আত্মীয়কে, গৃহস্বামী এক একটী জহরত উপহার দিতেন। এই ব্যাপারটাই এই উৎসবের বৈচিত্রতা। হয়তঃ এই ব্যাপারে পঞ্চাশ ষাট ঘর আত্মীয় আমন্ত্রিত হইতেন। আর প্রত্যেক আমন্ত্রিত ব্যক্তিই—হয় একখানি নীলা, নয় পান্না, নয় পোখ্রাজ, নয় মোতি, না হয় হীরা, উপহার রূপে পাইতেন।