পাতা:দেওয়ানা - হরিসাধন মুখোপাধ্যায়.pdf/৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দেওয়ানা

 নবাব সাহেব অগত্যা আসন ত্যাগ করিয়া উঠিয়া দাঁড়াইয়া বাহারবানুকে বুকের মধ্যে টানিয়া লইয়া বলিলেন—“যদি খুবই প্রয়োজন থাকে যাইতে পার। তবে এখন আদাব!”

 বাহারবানু হাসিমুখে নবাবের দিকে চাহিয়া বলিল— “বন্দেগি! যেন এ বাঁদীর উপর চিরদিনই এইরূপ একটা অনুগ্রহ থাকে।”

 আর কিছু না বলিয়া, সে একটু মৃদু হাসিয়া সেই স্থান ত্যাগ করিল। তাহার দ্রুতগমন ভঙ্গীতে বোধ হইল, যেন একখানা বিদ্যুৎ সেই কক্ষ হইতে সরিয়া গেল। বাহিরে বাহারের নিজের গাড়ী অপেক্ষা করিতেছিল। সুতরাং সে সেই গভীর রাত্রে গাড়ীতে উঠিয়া চলিয়া গেল।

 বাহারবানুকে বিদায় দিয়া নবাব সুজাবেগ কিয়ৎক্ষণ ধরিয়া চিন্তিতভাবে কক্ষমধ্যে পদচারণা করিতে লাগিলেন। তারপর তাঁহার হস্তিদন্তনির্ম্মিত একটী ক্ষুদ্র হাত বাক্সের নিভৃত স্থান হইতে, একখানি চিত্র বাহির করিয়া, কিয়ৎক্ষণ ধরিয়া সেই চিত্রের উপর স্থিরভাবে দৃষ্টি সম্বদ্ধ করিয়া রহিলেন।

 কিন্তু অতৃপ্ত নয়নে বহুক্ষণ দেখাতেও যেন তাঁহার তৃপ্তি হইল না। তিনি আলোকের খুব নিকটে আনিয়া, সেই ক্ষুদ্র চিত্রখানি একটা অপূর্ব্ব তৃপ্তির সহিত দেখিতে লাগিলেন।

 তারপর সেই চিত্রখানি যথাস্থানে পূর্ব্ববৎ লুকাইয়া রাখিয়া এক সোফার উপর বসিয়া অস্ফুটস্বরে বলিতে লাগিলেন—“এই চিত্রে অঙ্কিত এই আনার উন্নিসা দেবী, আর এই বাহারবানু

৩৮