পাতা:দেওয়ানা - হরিসাধন মুখোপাধ্যায়.pdf/৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দেওয়ানা

বাহারবানুর কলুষিত চিত্র তোমার মনঃক্ষেত্র হইতে মুছিয়া ফেল। একবার আমার দিকে ভাল করিয়া চাও। তোমার ষোল আনা প্রাণ আমায় দিয়া দেখ দেখি, মরজীবনের প্রকৃত সুখ কোথায়? জাহান্নমে—না বেহেস্তে!”

 নবাব সুজা বেগ যেন সানন্দে হস্ত প্রসারণ করিয়া আনারকে বক্ষে আলিঙ্গন করিতে গেলেন। কিন্তু কোথায় সে আনার উন্নিসা! আনার ত নাই। এ যে তার ছায়ামূর্ত্তি! সেই ছায়া মূর্ত্তি নিমেষ মধ্যে যেন তাঁহার শয্যা পার্শ্ব হইতে সরিয়া গিয়াছে।

 নবাব সুজা বেগ চক্ষু উন্মীলন করিবামাত্র দেখিলেন, তাঁহার খাস ভৃত্য মজঃফর, তাঁহার সন্মুখে জোড় হস্তে হুকুম অপেক্ষায় দাঁড়াইয়া আছে।

 নবাব সুজা বেগ মনে মনে বলিলেন—“ইহাকেই বলে অদৃষ্টের কঠোর ব্যঙ্গ! জাগরণে জ্বালায় জ্বলিতেছি। স্বপ্নে একটু সুখ ভোগ করিতেছিলাম। তাহাও আমার নসীব সহ্য করিতে পারিল না। হায়! এমন কি ভাগ্য করিয়াছি, যে আনার উন্নিসা আমার শয্যাপার্শ্বে আসিবে? তাহার সৌরভময় পবিত্র নিশ্বাসে, আমার এ কক্ষ পবিত্র হইবে?”

 নবাব শয্যা হইতে উঠিয়া, একটু বিরক্তির সহিত মজঃফরকে বলিলেন—“খপর কি বান্দা?”

 মজঃফর প্রথামত কুর্ণীস করিয়া বলিল— “বেলা হইয়াছে শয্যা ত্যাগ করুন। আজ আপনার সম্রাট-দরবারে যাইবার দিন।”

 

৪০