পাতা:দেওয়ানা - হরিসাধন মুখোপাধ্যায়.pdf/৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দেওয়ানা

 সে ইতিপূর্ব্বে একজন উচ্চপদস্থ আমীরের রক্ষিতা ছিল। তিনিই সখ্ করিয়া তাহার সাবেক আর্জ্জমন্দ নামচী পরিবর্ত্তন করিয়া বাহারবানু নাম রাখেন।

 বাহারবানুর গুণের ন্যায়,রূপের ও একটা খুব যশ ছিল। তাহার মদিরালসময় আঁখি দুটীর কেমন যে একটা অপূর্ধ্ব আকর্ষণী শক্তি ছিল যে, অতি সহজেই সে লোকের চিত্তের উপর একটা শক্তি বিকাশ করিত। যে ওমরাহের কথা বলিতেছি, তাঁহার অধীনস্থা হইয়া থাকিবার সময়ই এই বাহারবানুর যথেষ্ট ভাগ্য পরিবর্ত্তন হয়। কিন্তু তাহার দরিদ্র পিতা মাতা, এই হতভাগিনী বিপথগামিনী কন্যার তখনকার সুখসমৃদ্ধির অবস্থা দেখিয়া যাইতে পারেন নাই। কেন না— এই অবস্থা পরিবর্ত্তনের এক বৎসর পূর্ব্বেই, তাঁহারা পরলোকের পথিক হন।

 মানবের ভাগ্যটা যেন নদীর মত জোয়ার ভাঁটার নিয়মের অধীন। পূর্ব্বোক্ত ধনী ওমরাহের আশ্রয়াধীনে থাকিবার সময় এই কুহকময়ী বাহারবানুর অদৃষ্টের সমূহ উন্নতি হইয়াছিল। এক ক্ষুদ্র প্রাসাদতুল্য বাটিতে সে বাস করিত। দাসী বাঁদী, যান বাহন, এলবাব পোষাক, প্রভৃতি বড়মানুষির যে সব চিহ্ন, তাহার সবই হইয়াছিল। পূর্ব্বেই বলিয়াছি, ওমরাহ মহলে তাহার খুবই পসার হইয়াছিল। এমন কি, অনেক সময়ে মোগল শাহজাদাগণ, এই সংগীতকুশলার সঙ্গীত-চাতুর্যা শুনিবার জন্য, ছদ্মবেশে এই বাহারবাহুর আলয়ে উপস্থিত হইতেন।

 যে নামজাদা আমীরের আশ্রয়ে, সে রাজরাণীর মত সুখ

৪২