পাতা:দেওয়ানা - হরিসাধন মুখোপাধ্যায়.pdf/৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দেওয়ানা

এই আমীরউদ্দৌলাকে ধরিবার জন্য, অতি গভীর নিশীথেও সহসা বাহারবানুর কক্ষ মধ্যে উপস্থিত হইয়াও তাঁহার এই সন্দেহের প্রত্যক্ষ প্রমাণ সংগ্রহে কৃতকার্য্য হন নাই।

 আনারউন্নিসার পূর্ব্বের ছবিখানা, সুজার মাতা রুকিনা বিবিই, তাঁহাকে আনাইয়া দেন। যাহাতে আনারের এই ভরা যৌবনে, সুজার সহিত তাঁহার অন্তরঙ্গতা হয়, এজন্য মাসের মধ্যে দুই একবার তিনি আনারকে ইদানীং প্রায়ই নিমন্ত্রণ করিতেন। হিতাকাঙ্ক্ষিণী জননীর, বিপথগামী এই পুত্রকে গৃহবাসী করিবার এ চেষ্টা, যে একাবারে নিষ্ফল হয় নাই, তাহা পাঠক দেখিয়াছেন।

 সুন্দরীশ্রেষ্ঠা আনারের গুণের কথা পড়সীরা সকলেই জানিত। তাঁহার রূপেরও একটা খুব প্রশংসা ছিল। আর আনারউন্নিসার নিষ্কলঙ্ক রূপমাধুরী, যে এই বাভিচার-কলুষিত নবাব সুজা বেগের হৃদয়ে একটা দাগ কাটিয়া দিয়াছিল, আর তিনি যে এই আনারকে পত্নীরূপে লাভ করিবার জন্য খুবই উংসুক হইয়াছিলেন, তাহা তাঁহার লিখিত পূর্ব্বের পত্র হইতেই প্রকাশ!

 মাতার মৃত্যুর পর, বিষয়াদির সুশৃঙ্খলা সম্বন্ধে নানারূপ গোলযোগ উপস্থিত হওয়ায়, তিনি এতদিন বিবাহ সম্বন্ধে কোন মনোযোগ দিতে পারেন নাই। তাঁহার প্রাণে পবিত্র দাম্পত্য জীবন উপভোগের যে ক্ষীণ স্বল্পোজ্জ্বল রশ্মিটুকু ধীরে ধীরে ফুটিয়া উঠিতেছিল, এই ছলনাময়ী শয়তানী বাহারবানু সে টুকুকে এক

৪৫