পাতা:দেওয়ানা - হরিসাধন মুখোপাধ্যায়.pdf/৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দেওয়ানা

মধ্যে যাঁহারা এই সব গুপ্ত আড্ডার সন্ধান জানিতেন, তাঁহারাও কোন কথাই প্রকাশ করিতেন না। কেননা, তাঁহারাও ক্রীড়ক দলের মধ্যে। বিশ্বাসঘাতকতা করিলে মৃত্যু নিশ্চয়, তাহাও তাঁহারা বুঝিতেন।

 আমাদের যুবক নবাব সুজা বেগ ও বাহারবানু উভয়েই শ্রেষ্ঠদরের জুয়াড়ি। প্রেমের অভিনয়ে তাঁহাদের মধ্যে বিশ্বাস আর প্রীতির অভাব ঘটিলেও, এই প্রমারা খেলার সময়ে আত্মীয়তার বাঁধনটা খুবই জমিয়া যাইত।

 আগরায় এই বাহারবানুর উত্থান-বাটীর নীচের কক্ষে, আর “ইস‍্মালিয়া” কাফিখানার একটী অতি গোপনীয় স্থানে, প্রমারার দুইটী প্রধান আড্ডা ছিল। এই আড্ডাতে বাজে লোকের প্রবেশের কোন উপায়ই ছিল না। জনকয়েক বিশেষ পরিচিত সম্ভ্রান্ত ওমরাহ, অতি গভীর নিশীথে এক গুপ্ত দ্বার দিয়া আড্ডায় প্রবেশ করিয়া খেলা জমাইতেন। বলা বাহুল্য, আমাদের নবাব সুজা বেগ ও এই বাহারবানু, এই দুই আড্ডার দলভুক্ত।

 বাহারবানু, প্রমারার একজন পাকা খেলোয়াড়। নবাবেরও এই খেলার উপর ভারি ঝোঁক। কাজেই প্রেমের ব্যাপারে উভয়ের মধ্যে একটা বাঁধাবাঁধির শিথিলতা ঘটিলেও, প্রমারার ব্যাপারে উভয়ের মধ্যে, একটা খুব মাথামাখি সম্পর্ক ও একান্ত বিশ্বাসের ভাব ছিল।

 বাহারবানু প্রায়ই বাজি জিতিত। দুদশ টাকার নয়, বারে বারে দুশো, পাঁচশো, হাজার দুহাজার টাকার বাজী। উভয়ের

৪৭