পাতা:দেওয়ানা - হরিসাধন মুখোপাধ্যায়.pdf/৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দেওয়ানা

 ‘এ উপহার কাহারও অগ্রাহ্য করিবার যো ছিল না। কেন না -নিজাম আলির সময় হইতেই এই ভাবে উপহার দিবার প্রথা প্রচলিত। বাহাদুরীর মধ্যে এই— বিতরিত রত্নগুলির নামের ও বর্ণের পার্থক্য থাকিলেও, রতি হিসাবে তাহাদের ওজন আর মূল্য একই ছিল বলিয়া, আমন্ত্রিত বন্ধুগণের মধ্যে কাহারও মনক্ষোভ হইত না।

 এইরূপ একটা উপহারের প্রথা প্রচলিত থাকায়, আত্মীরেরা নিমন্ত্রণে আসিবার পূর্ব্বেই, নিমন্ত্রণকারী নবাব গৃহে নানারূপ সওগাত পাঠাইয়া দিতেন। মোটের উপর ইহা একটা কৌলিক প্রথা বই আর কিছু নয়। আর লোকেও জানিত—সরকারী রত্নবণিক এই আলি সুজা বেগের রত্ন ভাণ্ডারে অগণ্য মণি মুক্তা সঞ্চিত। তাঁহাদের অবস্থা বুঝিয়া, তাঁহারা এরূপ দান করিতে কোন কষ্টই অনুভব করেন না।

 রাত্রি দশটা বাজিবার পূর্ব্বে —বাড়ী প্রায় খালি হইয়া পড়িল। তখনও থাকিবার মধ্যে রহিলেন— দুই চারি জন আত্মীয়, যাঁহারা রক্তসম্পর্কে খুব অন্তরঙ্গ।

 কিন্তু ইহাদের মধ্যে এক সুরূপা যুবতীর দিকে আমাদের একটু দৃষ্টি রাখিতে হইবে। কেন না, তাঁহার সঙ্গেই এই গল্পের সম্বন্ধ খুব বেশী।

 এই নিমন্ত্রিতা নবীনা যুবতীর নাম আনারউন্নিসা। আনার পরমা রূপবতী। সুজা আলিবেগের বহু দিনের প্রতিবাসী। আর তাঁহার মাতা রুকিনা বেগমের সহিত এই যুবতীর পিতা