পাতা:দেওয়ানা - হরিসাধন মুখোপাধ্যায়.pdf/৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দেওয়ানা

নিষ্কলঙ্ক চরিত্র, যুক্ত প্রাণ, সুখে দুঃখে সমান সমবেদনার উপভোগী, স্নেহভরা হৃদয় মীর লতিফ— যার প্রাণের প্রত্যেক কথাটী প্রত্যেক প্রবৃত্তিটি, আমার অজানিত নয়। আর অপর দিকে, যাহাকে আমি সম্পূর্ণরূপে চিনি না,— যার হৃদয় কি উপাদানে গঠিত, তাও জানি না, যার চরিত্রবল নাই, চারিদিকে যাহার নৈতিক শিথিলতার শোচনীয় কাহিনী,—যে বাহার বানুর হস্তে ক্রীড়াপুত্তলী, তাহার করে আমার স্নেহময় পিতা, আমাকে সমর্পণ করিতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হইয়াছেন।”

 “নিজের স্বাধীন মত, ব্যক্ত করিবার ইচ্ছা থাকিলেও, পাছে পিতা আমাকে প্রগলভা বলিয়া ভাবেন, অবাধ্য কন্যা বলিয়া অভিসম্পাত করেন, সেই ভয়ে পিতাকেও ত কিছুই বলিতে পারিতেছি না! হায়! আজ যদি আমার মা থাকিতেন?

 এমন সময়ে তাহার পিতা কক্ষ দ্বারে করাঘাত করিয়া ডাকিলেন,—“আনার!”

 পিতার কণ্ঠস্বর শুনিয়া, আনার ত্বরিতগতিতে উঠিয়া দ্বার খুলিয়া দিল। জামাল খাঁ, কক্ষের দরোজাটী উত্তমরূপে ভেজাইয়া দিয়া, কন্যা যে সোফার উপর বসিয়াছিল, তাহার উপর গিয়া বসিলেন।

 আনারউন্নিসা, দেখিল, তাহার পিতার মুখ শুষ্ক। তাহাতে যেন একটা দুশ্চিন্তাজনিত উত্তেজনার ভাব ফুটিয়া উঠিয়াছে।

 আনারউন্নিসা, পিতার সেই মলিন মুখ দেখিয়া বলিল,—“তোমার মুখখানি আজ অত শুক্‌নো কেন বাবা?”

৬৯