পাতা:দেওয়ানা - হরিসাধন মুখোপাধ্যায়.pdf/৭৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দেওয়ানা

 আনার। কিন্তু দেখিতেছি, এই পত্র লেখকের হৃদয় অতি সংকীর্ণ, অতি অনুদার। আর তুমি এই প্রকৃতির লোককে, তোমার জামাতা বলিয়া স্বীকার করিতে ইচ্ছুক!

 জামাল। না করিলেও ত অন্য উপায় নাই। এক সময়ে নসিবের অনুগ্রহে, ঐশ্বর্য্য যথেষ্টই করিয়াছিলাম। আমিও একজন ছোট দরের আমির-ওমরাহ গোছ লোক ছিলাম। এখন বিরূপ নসীব সে ঐশ্বর্য্যের প্রায় সবই কাড়িয়া লইয়াছে। কিন্তু সমাজে সম্ভ্রম, ইজ্জতের মূল্য, কাড়িয়া লইতে পারে নাই। একদিন এই ইজ্জত বজায়ের জন্য, আমি রুকিনা বিবির শরণাপন্ন হইয়া ছিলাম। উহারা ঋণ দিয়া আমার ইজ্জত বজার রাখিয়াছিল। এখন আমার সেই ইজ্জত বিপন্ন। তুমি আমার বুদ্ধিমতী কন্যা। পুত্র একটা থাকিলে তাহাকে এরূপ স্থলে যাহা করিতে বলিতাম, তাহা তোমায় করিতে বলিতেছি। পারিবারিক সম্ভ্রম নষ্ট হওয়া, মৃত্যু যন্ত্রণার চেয়েও যে বেশী।  আনার। বলুন—আপনার মনের ইচ্ছা কি? আপনি যা করিতে বলিবেন, আমি তাহাই করিতে প্রস্তুত।

 জামাল খাঁ, কন্যার মুখের দিকে একবার চাহিবমাত্রই বুঝিলেন, সে মুখে একটা দৃঢ়প্রতিজ্ঞার ছায়া ফুটিয়া উঠিয়াছে। তিনি কম্পিতস্বরে বলিলেন,—“আমি তোমাকে কিছুই বলিব না। তুমিই আমাকে পরামর্শ দাও,এক্ষেত্রে আমি কি করিব? নবাবের এই কঠোর পত্রের অবজ্ঞাসূচক উত্তর কি করিয়া দিতে হয়, তাহা আমি জানি। কিন্তু যা লইয়া দর্প করিব, সে শক্তি ত আমার

৭১