পাতা:দেওয়ানা - হরিসাধন মুখোপাধ্যায়.pdf/৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দেওয়ানা

বুঝিতে পারে, বেইজ্জত হইবার অবস্থা আসিলে, মনের অবস্থা কিরূপ শোচনীয় হয়।

 পূর্ব্বেই বলিয়াছি, নবাব সুজা বেগের মাতা রুকিনা বিবি, তাঁহার দূর সম্পর্কীয়া আত্মীয়া। তিনি এই রুকিনা বিবির নিকট হইতে অনেক চেষ্টায়, পঞ্চাশ সহস্র মুদ্রা সংগ্রহ করিয়া, বিদ্রোহী বন্ধু মহাজনদের দিয়া ইজ্জত রক্ষা করেন। বলা বাহুল্য, এই টাকার জন্য রুকিনা বিবিকে এক তমসুখ লিখিয়া দিতে হয়।

 জামাল খাঁ, নবাব সুজা বেগের দ্বিতীয় পত্রের উত্তরে লিখিয়াছিলেন—“তোমার মাতার মৃত্যুর পর, তুমি আর কোন চেষ্টা না করায় ও অরক্ষণীয়া কন্যা বেশী দিন রাখিতে অক্ষম হওয়ায়, আমি মীর লতিফের সহিত আনারের বিবাহ সম্বন্ধ একরূপ পাকা করিয়া ফেলিয়াছি, কিন্তু এজন্য আমি বড়ই দুঃখিত। আমার ও আমার কন্যার মহা দূর্ভাগ্য, যে তোমার সহিত কুটুম্বিতা করা, আমাদের সহিল না।”

 কিন্তু পূর্ব্বেই বলিয়াছি, নবাব সুজা বেগ বড়ই নির্ব্বদ্ধবান। এই আনারকে পত্নীরূপে গ্রহণ করিতে পারিলে, বাহারবানুর কবল হইতে তিনি অতি সহজেই যুক্তিলাভ করিতে পারিতেন। কিন্তু কোথাকার কে এক পথের ভিক্ষুক মীর লতিফ আসিয়া, তাঁহার উদ্দেশ্য সিদ্ধির পথে দাঁড়াইয়াছে, ইহা ভাবিয়া, তিনি মহাক্ষুব্ধ হইয়া জামাল খাঁকে লিখিলেন,—“কন্যাদানের স্বাধীনতা, সম্পূর্ণরূপে আপনার। যদি এ স্বাধীনতার অসদ্ব্যবহার করেন, জানিবেন, আমি এবং আমার মাতা এতদিন আপনার উপর যে

৭৫