পাতা:দেওয়ানা - হরিসাধন মুখোপাধ্যায়.pdf/৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দেওয়ানা

করিতে পারিবেন, এতজ্জনিত একটা আনন্দ উচ্ছ্বাসে অধীর হইয়া, পর দিনই তিনি নবাব সুজা বেগের সহিত সাক্ষাৎ করিয়া বিবাহের দিন স্থির করিয়া আসিলেন। আর সেই সঙ্গে সঙ্গে এ কথাটাও স্থির হইয়া গেল, যে বিবাহের দিনই নবাব ঋণপত্রখানি তাঁহাকে ফেরৎ দিবেন।

 আর এতটা আত্মসমর্পণ, এতটা আনুরক্তি, এতটা আত্মীয়তা, এতটা স্নেহ, যে দুনিয়ার ঘটনা স্রোতের ঘূর্ণাবর্ত্তে পড়িয়া, একাবারে তৃণখণ্ডের মত শতধা চূর্ণ হইয়া ভাসিয়া যাইতে পারে, হতভাগ্য মীর লতিফ, কেবল তাহাই ভাবিতে লাগিল।

 ঋণঘটিত এই বাধ্য বাধকতার জন্যই যে এই বিবাহে জামালখাঁকে মত দিতে হইয়াছে, ইহাও সে বুঝিল। সে মনে মনে ভাবিল—“হায়! আজ আমার যদি এ অর্থ টা থাকিত?”

 সহিষ্ণুতা, মীর লতিফের স্বভাবগত। বাল্যকাল হইতে দুঃখের ক্রোড়ে যারা লালিত পালিত হয়, সহিষ্ণুতাটা তাহারা খুবই আয়ত্ত্ব করিয়া রাখে।

 এজন্য যখন সে জামালখাঁর নিকট এই সংবাদ প্রথমে শুনিল, তখন সে সাহসও সহিষ্ণুতা সঞ্চয়ে, মনটাকে তাহার শক্তির অধীন করিয়া ফেলিল। আর এই শক্তির প্রভাব এতটা বেশী, যে জামালখাঁ, অনেকক্ষণ ধরিয়া লক্ষ্য করিয়াও তাহার মুখভাবের কোনরূপ বৈলক্ষণ্য লক্ষ্য করিতে পারিলেন না। এই জন্যই জামাল খাঁর মনে একটা সংস্কার জন্মিল, যে এই বিবাহ ব্যাপারে সে একটুও বিস্মিত নহে। আর এই কারণেই জামাল খাঁ

৭৯