পাতা:দেওয়ানা - হরিসাধন মুখোপাধ্যায়.pdf/৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দেওয়ানা

 “তবে কেন ভ্রমে পড়িয়া কষ্ট পাও? একটু ত্যাগ স্বীকার করিয়া দেখ দেখি, তাহাতে তুমি কত আনন্দ পাইবে। একটু স্বার্থ ভুলিয়া পরার্থের জন্য প্রাণটাকে সমর্পণ করিয়া দেখ দেখি, তাহাতে কি পবিত্র সুখ। কি অনাবিল তৃপ্তি!”

 “ছার! তোমার এ রূপমোহ! এই দুনিয়ায় এই আনার উন্নিসাই কি শ্রেষ্ঠ রূপসী ও গুণবতী? এই ধরার বুকে এমন আর কি কেহ নাই, যে আনারের অপেক্ষা তোমায় বেশী ভালবাসিতে পারে?”

 “ভুলিয়া যাও—মীর লতিফ! তুমি এই আনারউন্নিসাকে। মনে ভাবিও, যেন কোন সুখনিশায় তুমি একটা সুখস্বপ্ন দেখিয়া অধীর হইয়াছিলে। ভালবাসার জন্য— ভালবাসিতে শিক্ষা কর! আনারের অদৃষ্টে বিধাতা যাহা লিখিয়াছেন, তাহার ভবিষ্যৎ জীবনের সুখশান্তি আনয়নের জন্য যে বিধান করিয়া দিতেছেন, তুমি তাহার সহায়তা কর। তাহার অতি নিকটে সমাগত সৌভাগ্য সন্মুখে, প্রলোভনের মত না থাকিয়া তাহার নেত্রপথ হইতে সুদূর বিস্মৃতির রাজ্যে চলিয়া যাও। এই আত্মত্যাগের মহত্ত্বে আনার যখন জীবনে চিরসুখী হইবে, তখন তুমিই যে আনারকে লাভ করার চেয়েও বেশী আনন্দ পাইবে!”

 এতক্ষণের পর অন্তরস্থ জাগ্রত বাণীর এই সংকেতময় উপদেশে মীর লতিফ্ একটা সোজা পথ দেখিতে পাইল। এতক্ষণ সে এক অন্ধকারময় বন্ধুর পথে বিচরণ করিয়া, প্রতি পদক্ষেপেই যাতনা ভোগ করিতেছিল—কিন্তু এখন সে যেন দেখিল, তাহার

৮৯