পাতা:দেওয়ানা - হরিসাধন মুখোপাধ্যায়.pdf/৯৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

একাদশ পরিচ্ছেদ।

 ভাগ্য মানুষকে যে পথে লইয়া যায়, ভবিতব্য তাহার নিজের ঘোর কৃষ্ণবর্ণের বহিতে, যে ভাবে মানুষের জীবনের ভবিষ্যৎ দিন গুলির জমা খরচ মিলাইয়া, খতিয়ান করিয়া লুকাইয়া রাখে, তাহা মহাশক্তিবান মানবেরও জানিবার সাধ্য নাই। আনার-উন্নিসা ত তাহাদের তুলনায় অতি ক্ষুদ্র। সুতরাং ভবিতব্যের অব্যর্থ লেখনী তাহার ভবিষ্যৎকে সে পথে চালিত করিল, সে সেই পথেরই পথিক হইল।

 আর বেশী ভূমিকা না করিয়া, আমরা সোজাসুজি বলিয়া ফেলিব, এই ঘটনার এক সপ্তাহ পরে, জামাল খাঁ তাহার রূপসী কন্যা আনারউন্নিসাকে নবাব সুজাবেগের হস্তে সমর্পণ করিয়া তৃপ্তিলাভ করিলেন।

 অতবড় একজন ধনী ওমরাহের বিবাহে, যেভাবে জাঁক-জমক হওয়া প্রয়োজন বা সঙ্গত, তাহার কিছুই হইল না। তাহার গূহ্য কারণ—নবাব সুজাবেগই জানেন। তবে এটুকু বলা যায়, এই উদ্বাহ ব্যাপারে মাঝামাঝি রকমের একটা আনন্দও উৎসবানুষ্ঠান হইয়াছিল বটে। তাহাতে কেবল জামাল খাঁ ও সুজাবেগের অতি অন্তরঙ্গ মিত্র ও আত্মীয়বর্গই নিমন্ত্রিত হইয়াছিলেন। বলা বাহুল্য, সেই বিবাহান্তে জামাল খাঁর ঋণের সেই তমলুক খানি, ছিন্ন করিয়া ফেলিয়া দিয়া তাঁহার জামাতা তাঁহাকে ঋণ মুক্ত করিলেন।

৯৭