পাতা:দেওয়ান গঙ্গাগোবিন্দ সিংহ - চণ্ডীচরণ সেন.pdf/২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চতুর্থ অধ্যায়। S L শ্বশুর ও পুত্রবধূ 1

মাঘ মাস। স্বারংকাল সমুপস্থিত। প্রাণনগরের পথের পার্বাস্থত শস্তক্ষেত্র হইতে এক এক বোঝ! খড় মাথায় লইয়৷ তিনটি ক্বৰক গৃহাভিমুখে বাই- তেছে। রাস্তার উভয় পার্শ্বেই সবিস্তীর্ণ প্রান্তর পড়িয়া রহিয়াছে। কিন্ত ক্ষেত্রের অধিকাংশ জমীই তিন বৎসর পর্য্যন্ত আবাদ হয় নাই। স্থানে স্থানে কেবল ছুই এক খণ্ড জমীতে ধানগাছের চিহ্ন দেখা যায়। চারি পাঁচ বৎসর পুর্বে এই সকল ক্ষেত্র হইতে অসংখ্য কৃ্ষকদল শ্রেণীবদ্ধ হইয়া গান করিতে করিতে স্ব স্ব গৃহে প্রত্যাবর্তন করিত। কিন্তু প্রাণনগর এখন প্রায় প্রাণী শূল্ঠ হইয়াছে। রাস্তার পশ্চিম পার্শ্বস্থিত ক্ষেত্রের পশ্চিম প্রান্তে ছুই একটা মাত্র কৃষকের ভগ্কুটার দেখা যায়। আজ কেবল তিনজন ক্বষক সেই কুটীরাভিমুখে চপলিয়াছে। ইহারা নিঃশৰে চলিয়। যাইতেছে। সক- লেরই মুখ বিষাদে পরিপূর্ণ। যেরূপ ধীরে ধীরে ইটিতেছে, তাহাতে বোধ হয় যেন ইহাদিগের শরীরে কিঞ্চিন্মাত্রও বল নাই। অন্ন কষ্টে শরীর জীর্ণ শীর্ণ হইয়া পড়িয়াছে। .

এই ক্ববকগণ যে রাস্ত| পার হইয়া নিজ নি গৃংাতিমুখে যাইতেছিল, সেই রাস্তা দিনাজপুরের সহর হইতে বরাবর প্রাণনগরের জঙ্গলের মধ্য দিয়৷ ঠাকুর গাও পর্য্যন্ত গিয়াছে। এই 9% কয়েকটার বাটী প্রাণনগ- রের উত্তর প্রান্তে। ক্বযকগণ রাস্তার পূর্ব পার্কের ক্ষেত্র হইতে আসিয়া পশ্চিম পাশ্বস্থ ক্ষেত্রের মধ্য দিয়া বাড়ী যাইতেছিল। তিন জন ক্বষকের মধ্যে একজন অত্যন্ত বৃদ্ধ, সে অপর ছুই জনের অনেক পশ্চাতে পড়িয়াছে। যে ছুই জন অগ্রে চলিয়াছে তাহারা রাস্তা পার হইয়া! পশ্চিম পার্কের ক্ষেত্রের মধ্যে প্রবেশ করিয়াছে। বৃদ্ধ কৃষক রাস্তায় উঠিবামাত্র দেখিল একজন বৃদ্ধ বৈষ্ণব ভ্রুত পদে ভিক্ষার ঝুলি স্কন্ধে করিয়া, দক্ষিণ দিক হইতে বরাবর উত্তর মুখে চলিতেছে। বৈষ্ণবকে দেখিবামাত্র বৃদ্ধ ক্বষক বলিল "ঠাকুর গোসীই শী্ব বাড়ী যান। আজ পাচ জন কোম্পানির বরকন্দাঙ্কে উত্তর দিকে যাইতে দেখিয়াছি ।"