পাতা:দেববাণী - স্বামী বিবেকানন্দ.pdf/১২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দেববাণী । --না, যেন একটা প্ৰবল বেগশালিনী পার্বত্য নদীকে জোর করে ঠেলে তার উৎপত্তিস্থানে নিয়ে যাওয়া । এতে অতি সত্বর বস্তু লাভ হয় বটে, কিন্তু বড় কঠিন । জ্ঞানমাৰ্গ বলে, “সমুদয় প্ৰবৃত্তিকে নিরোধ কর।” ভক্তিমাৰ্গ বলে, “স্রোতে গা ভাসান দাও, চিরদিনের জন্য সম্পূর্ণ আত্মসমৰ্পণ কর।” এ পথ দীর্ঘ বটে, কিন্তু অপেক্ষাকৃত সহজ ও সুখকর । ভক্ত বলেন,-“প্ৰভু, চিরকালের জন্য আমি তোমার । এখন থেকে আমি যা কিছু করছি বলে মনে করি, তা বাস্তবিক তুমিই করুছআর “আমি” বা “আমার’ বলে কিছু নেই।” “হে প্ৰভো, আমার অর্থ নেই যে, আমি দান করুব ; আমার বুদ্ধি নেই যে, আমি পাণ্ডিত্য করব ; আমার সময় নেই যে, যোগ অভ্যাস করব ; হে প্ৰেমময়, আমি তাই তোমাকে আমার দেহমান অৰ্পণ করলাম।” যতই অজ্ঞান বা ভ্ৰান্ত ধারণা আসুক, কিছুতেই জীবাত্মা ও পরমাত্মার মধ্যে ব্যবধান ঘটাতে পারে না । ঈশ্বর বলে কেউ যদি নাও থাকেন, তথাপি প্রেমের ভাবকে দৃঢ়ভাবে ধরে থাক । কুকুরের মত পচা মড়া খুজে খুজে মরার চেয়ে ঈশ্বরের অন্বেষণ করতে করতে মরা ভাল । সর্বশ্রেষ্ঠ আদর্শ বেছে নাও, আর সেই আদর্শকে লাভ করবার জন্য সারা জীবন নিয়োজিত কর । মৃত্যু যখন এত নিশ্চিত, তখন একটা মহান উদ্দেশ্যের জন্য জীবনপাত করার চেয়ে আর বড় জিনিস কিছু নেই। ভক্তিদ্বারা বিনা আয়াসে জ্ঞানলাভ হয়-ঐ জ্ঞানের পর পরাভক্তি আসে । ܘ ܘ