পাতা:দেববাণী - স্বামী বিবেকানন্দ.pdf/১৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দেববাণী । তাকেই প্ৰকাশ করে গোলকাটাকে উত্তপ্ত করে-তার ভিতরে প্রবেশ করে নয়, সেই রকম । শঙ্কর বলেন, জ্ঞান একটা বন্ধন নয়, কারণ, এ সেই পুরুষ বা ব্ৰহ্মের স্বরূপ । জগৎ ব্যক্ত বা অব্যক্তিরূপে সর্বদাই রয়েছে, সুতরাং সেই জ্ঞানস্বরূপের জ্ঞেয় বস্তুর কোনকালে অভাব হয় না । জ্ঞান-বল-ক্রিয়াই ঈশ্বর । জ্ঞানলাভের জন্য তঁর দেহেন্দ্ৰিয়াদি কোন আকারেরই প্রয়োজন নাই—যে সসীম, তার পক্ষে সেই অনন্ত জ্ঞানকে ধরে রাখবার জন্য একটা প্ৰতিবন্ধকের (অর্থাৎ দেহেন্দ্ৰিয়াদির) প্রয়োজন আছে বটে, কিন্তু ঈশ্বরের ঐ রূপ সহায়তার আদৌ কোন আবশ্যকতা নেই। বাস্তবিক এক আত্মাই আছেন, বিভিন্ন লোকগামী জীবাত্মা বলে স্বতন্ত্র আত্মা কিছু নেই । পঞ্চ প্ৰাণ যাতে একীভূত হয়েছে, এই দেহের সেই চেতন নিয়ন্তাকেই জীবাত্মা বলে, কিন্তু সেই জীবাত্মাই পরমাত্মা, যেহেতু আত্মাই সব । তুমি তাকে যে অন্যরূপ বোধ করছ, সে ভ্ৰান্তি তোমারই, জীবে নয়। তুমিই ব্ৰহ্ম, আর তুমি আপনাকে আর যা কিছু বলে ভাবছি, তা ভুল। কৃষ্ণকে কৃষ্ণ বলে পুজা করো না, কৃষ্ণের মধ্য দিয়ে যে আত্মা প্ৰকাশিত হয়েছেন তাঁরই উপাসনা কর । শুধু আত্মার উপাসনায়ই মুক্তিলাভ হবে। এমন কি, সগুণ ঈশ্বর পর্য্যন্ত সেই আত্মার" বহিঃপ্রকাশমাত্র । শঙ্কর বলেছেন, “স্বস্বরূপানুসন্ধানং ভক্তিরিত্যভিধীয়তে ||”-নিজস্বরূপের আস্তরিক অনুসন্ধানকেই ভক্তি বলে । আমরা ঈশ্বর লাভের জন্য যত বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করে থাকি, সে সব সত্য । যেমন অরুন্ধতী নক্ষত্ৰকে দেখাতে হলে তার অ্যাশপাশের নক্ষত্রগুলার সাহায্য নিতে হয়, এও শুধু তেমনি । Nr