পাতা:দেববাণী - স্বামী বিবেকানন্দ.pdf/১৯৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দেববাণী । এ আর আশ্চৰ্য্য কি ? আর কাকে বা কোন বস্তুকে আমরা ভালবাসতে পারি ? আমাদের ‘দগ্ধোন্ধনমিবানলাম’ হওয়া চাই। যখন তোমরা কেবল ব্ৰহ্মকেই দেখবে, তখন আর কার উপকার করতে পারবে ? ভগবানের তা আর উপকার করতে পার না ? তখন সব সংশয় চলে যায়, সর্বত্র সমত্বভাব এসে যায় । যদি তখন কারও কল্যাণ করা ত নিজেরই কল্যাণ করবে। এইটী অনুভব করা যে, দানগ্রহীতা তোমা অপেক্ষা শ্ৰেষ্ঠ, তুমি যে তার সেবা করছি, তার কারণ-তুমি তার চেয়ে ছোট ; এ নয় যে, তুমি বড় আর সে ছোট । যেমন গোলাপ নিজের স্বভাব্যবশতঃই সুগন্ধ বিতরণ করে, আর, সুগন্ধ দিচ্ছি বলে মোটেই টের পায় না, তুমিও সেই ভাবে দান কর । সেই শ্রেষ্ঠ হিন্দু সংস্কারক রাজা রামমোহন রায় এইরূপ নিঃস্বার্থ কৰ্ম্মের অদ্ভুত দৃষ্টান্তস্বরূপ । তিনি তাঁর সমুদয় জীবনটা ভারতের সাহায্যকল্পে অৰ্পণ করেছিলেন । তিনিই সতীদাহ প্ৰথা বন্ধ করেন । সাধারণতঃ লোকের বিশ্বাস, এই সংস্কারকাৰ্য্য সম্পূর্ণরূপে ইংরাজদের দ্বারা সাধিত, কিন্তু প্ৰকৃতপক্ষে তা নয়। রাজা রামমোহন রায়ই এই প্রথার বিরুদ্ধে আন্দোলন আরম্ভ করেন এবং একে রহিত করবার জন্য গবৰ্ণমেণ্টের সহায়তালাভে কৃতকাৰ্য্য হন। যতদিন না। তিনি আন্দোলন আরম্ভ করেছিলেন, ততদিন ইংরাজেরা কিছুই করেননি। তিনি ব্ৰাহ্মসমাজ নামে বিখ্যাত ধৰ্ম্মসমাজও স্থাপন করেন, আর একটী বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জন্য ৩ লক্ষ টাকা চান্দা দেন । তিনি তার পর সরে এলেন এবং বললেন “তোমরা আমাকে ছেড়ে নিজেরা এগিয়ে যাও ।” তিনি নামযশ একদম চাইতেন না, নিজের জন্য কোনরূপ ফলাকাজক্ষণ করতেন না । S. Goo