পাতা:দেববাণী - স্বামী বিবেকানন্দ.pdf/৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দেববাণী । সব গভীর স্থান আছে, যেখানে আমরা এখনও পৌঁছতে পারি নি, এবং আর কতকগুলি জায়গা আছে, যেখানে সাম্যম্ভাব পুনঃসংস্থাপিত হয়েছে-কিন্তু উপরের তরঙ্গ সৰ্ব্বদাই চলেছে, তথায় অনন্তকাল ধরে ঐ সাম্যাবস্থা লাভের চেষ্টা চলেছে। জীবন ও মৃত্যু একটা ব্যাপারেরই বিভিন্ন নামমাত্র, একই মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ । উভয়ই মায়া-এ অবস্থাটাকে পরিষ্কার করে বোঝাবার জো নেই-এক সময়ে বাছবার চেষ্টা হচ্ছে, আবার পরমুহূৰ্ত্তে বিনাশ বা মৃত্যুর চেষ্টা । আমাদের যথার্থ স্বরূপ-আত্মা-এই উভয়েরই পারে। আমরা যখন ঈশ্বরের অস্তিত্ব স্বীকার করি, তা আর কিছু নয়, তা প্ৰকৃতপক্ষে সেই আত্মাইযা থেকে আমরা আমাদের পৃথক করে ফেলেছি, আর আমাদের থেকে পৃথক বলে উপাসনা করছি । কিন্তু তা চিরকালই একমাত্র ঈশ্বরপদবাচ্য যে আমাদের অন্তরাত্মা, তারই উপাসনা । সেই নষ্ট সাম্যাবস্থা পুনঃপ্রাপ্ত হতে হলে আমাদের প্রথমে রজো স্বারা তমঃ, পরে সন্তু দ্বারা রজঃকে জয় করতে হবে । সত্ত্ব অর্থে সেই স্থির ধীর প্রশান্ত অবস্থা, যা ধীরে ধীরে বাড়তে বাড়তে শেষে অন্যান্য ভাব অর্থাৎ রজঃ তমঃ একেবারে চলে যাবে । বন্ধন ছিড়ে ফেলে দাও, মুক্ত হও, যথার্থ "ঈশ্বল্পতনয়’ ‘হ3, তবেই যীশুর মাত “পিতা’কে দেখতে পাবে। ধৰ্ম্ম 'ও ঈশ্বর বলতে অনন্ত শক্তি, অনন্ত বীৰ্য্য বুঝায়.। দুর্বলতা, দাসত্ব ত্যাগ কর । যদি তুমি মুক্তস্বভাব হও, ভবেই তুমি কেবলমাত্র আত্মা ; যদি মুক্তস্বভাব হও, তবেই অমৃতত্ব তোমার করতলগত ; তবেই বলি-ঈশ্বর যথার্থ আছেন, যদি তিনি মুক্তস্বভাব হন ।