পাতা:দেশবন্ধু-কথা - জিতেন্দ্রলাল বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চতুর্থ পরিচ্ছেদ NSJONS) লইয়াই তাঁহাকে পর-জগতে কি কষ্ট পাইতে হইত, কে জানে! পিতাকে ঋণমুক্ত করিতে পুত্ৰকে কি বিষময় জীবনই না বহন করিতে হইয়াছে ! আহারে রুচি নাই, বিশ্রামে শান্তি নাইপর্বতপ্ৰমাণ ঋণ যেন পথের সামনে আচল, আটল দুলঙ্ঘ্যি বাধা সৃষ্টি করিয়া দাড়াইয়া আছে! কিন্তু ধন্য সেই পুরুষকার, আর ধন্য সেই পুরুষসিংহ, পর্বত যাহার পায়ের সম্মুখে মাথা নীচু করিতে বাধা হইয়াছিল। কিন্তু-এর পরেও চিত্তরঞ্জনের কিছুমাত্র পরিবর্তন দেখা গেল না। দানে-ফতুর পিতার পুত্ৰ সাধারণ মানুষ হইলে সাবধানেই চলিতেন, আন্ততঃ নিজের উত্তরকালের, স্ত্রা, সন্তানসন্ততির জন্য মোটা-রকম গোছ করিয়া। তবে কিছু কিছু দান করিতেন। কিন্তু চিত্তরঞ্জন সাধারণ ছিলেন না ; যে ভগবান র্তাহাকে গড়িয়াছিলেন, তিনি তাহাকে অসাধারণ করিয়াই নিৰ্ম্মাণ করিয়াছিলেন। দান-কাৰ্য্য চলিতে লাগিল ; ডান হাত দান করে, বা হাত খবর পায় না। দিন নাই, ক্ষণ নাই, যোগ্য নাই, অযোগ্য নাই-প্রসারিত হস্ত দেখিলেই চিত্তরঞ্জনের দক্ষিণ হস্ত আপনি প্রসারিত হইত। একথা বলিলে খুব বেশী বলা হইবে না। যে, বাঙ্গালা দেশে এমন লোক নাই যিনি চিত্তরঞ্জনের কাছে হাত পাতিয়া রিক্তহস্ত ও শূন্যহৃদয় বহিয়া ফিরিয়াছেন। মহাভারতে পড়ি, কর্ণের প্রতিজ্ঞা ছিল, প্রত্যাশী কখন তঁাহার দ্বারে আসিয়া ফিরিবে না। আমাদের বাঙ্গালী দাতা-কর্ণের সেইরূপ কোন প্ৰতিজ্ঞা ছিল কি না বলিতে পারি না ; তবে কেহ ষে সত্যই ফিরে নাই, তাহা নিঃসংশয়ে বলিতে পারা যায়।