পাতা:দেশবন্ধু-কথা - জিতেন্দ্রলাল বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8. দেশবন্ধু-কথা পক্ষে আরও গৌরবের কথা । কারণ, সচরাচর দেখা যায় যে, র্যাহারা দারিদ্র্যের সহিত ভীষণ সংগ্রাম করিয়া ঐশ্বৰ্য্যে উপনীত হইয়াছেন, টাকাটা তঁহাদের কাছে বেশী বড় হইয়া দাড়ায় । দেশবন্ধু দরিদ্রের সন্তান বা দারিদ্র্যে পালিত, এ কথা কেহ বলিতে পারেন না । কিন্তু নানা কারণে র্তাহাকে ঘোর অবস্থা-বিপৰ্য্যয়ের মধ্য দিয়া যাইতে হইয়াছিল । তিনি এক দিন আমাদের কাছে গল্প করিয়াছিলেন যে, ব্যবসায়ের প্রথম প্ৰথম হাইকোর্টের পর তিনি হাঁটিয়া ভবানীপুরের বাসা পৰ্য্যন্ত যাইতেন - ব্যায়ামের জন্য নহে, ট্রামের ছয় পয়সা ভাড়া বঁাচাইবার জন্য । এমন ভীষণ দারিদ্র্যের অবস্থা কাটাইয়া যিনি মাসে পঞ্চাশ হাজার টাকা রোজগার করিয়া গিয়াছেন, তাহার পক্ষে টাকার মায়া করা স্বাভাবিক – কিন্তু দেশবন্ধুর কোন দিন, তাহা হয় নাই । অনেকে লক্ষ্য করিয়া থাকিবেন, দেশবন্ধু সহজে টাকা স্পর্শ করিতে চাহিতেন না। খুলনায় মামলা করিতে গিয়াছেন-একসঙ্গে পচিশ হাজার টাকা দেওয়া হইল। কিন্তু এত টাকার দিকে, একবার ফিরিয়াও তাকাইলেন না । বেণী খানসাম টাকা গণিয়া লইল, তাহার কাছেই টাকা এবং টাকার বাক্সের চাবি রহিলদেশবন্ধু তাহার খোজও করিলেন না। একবার দুইবার নহে, বহুবার এই ব্যাপার প্রত্যক্ষ করিয়াছি। তাই বলিতেছিলাম, যে লোকের নিকট টাকা এতটা তুচ্ছ ও অসার বলিয়া পরিগণিত হইত, তাহার পক্ষে টাকার ত্যাগটাই বড় ত্যাগ বলিয়া মনে করিলে মানুষটিকে ভুল বুঝা হইবে