স্ত্রীলোকে আসক্তিশূন্য যাবত না হয়
তাবৎ মানবগণ বদ্ধচিত্ত রয়;―
স্তন্যপায়ী বৎস যথা গাভী পানে চায়,
তেমতি মানব মতি আকৃষ্ট মায়ায়॥১২॥
ছেদন করিও না। প্রবৃত্তি সকল দ্বারা প্রণোদিত হইলে সংসারে যে অত্যাসক্তি এবং তজ্জনিত দুঃখ হয়, তাহাই বন বা উপক্লেশ। এবং পূর্ব্বজন্ম ও পরজন্মার্জ্জিত যে অভ্যাসক্তি তাহাকেই বন ও উপবন বলা হইয়াছে। বৃক্ষ বলিতে চিত্ত বৃত্তিকে বুঝায়। কামনার বন ধ্বংস কর, কিন্তু চিত্তবৃত্তি ধ্বংস করিও না; বৃত্তির ধ্বংস না করিয়া, তাহার অপব্যবহার নিবারণ কর―ইহাই তাৎপর্য্যার্থ এস্থলে নির্ব্বাণ শব্দের ব্যুৎপত্তিগতা অর্থ লইয়া আলোচনা হইয়াছে; যাহাতে বান বা অভিলাষ নাই, তাহাই নির্ব্বাণ, অর্থাৎ সমস্ত অভিলাষ ত্যাগ করিলে নির্ব্বাণ লাভ হয় এবং নির্ব্বাণ লাভ হইলে কোন অভিলাষ থাকে না। বনকে অভিলাষ বা কামনার সমষ্টি স্বরূপ ধরিয়া বলা হইয়াছে যে বনহীন বা নির্ব্বণ হইলে নির্ব্বাণ পাইবে। নির্ব্বণ ও নির্ব্বাণ এই দুইটি শব্দার্থে শ্লেষ হইয়াছে। মোক্ষমুলরের অনুবাদে আছে “cut down the whole forest (of lust) not a tree only” অর্থাৎ একটি বৃক্ষ নয়, সমস্ত বৃক্ষরাজি সমন্বিত বনভূমিকে ধ্বংস কর। কিন্তু এইরূপ অর্থই শ্লোকের উদ্দেশ্য কিনা সন্দেহ স্থল।