পাতা:ধর্ম্মজীবন (প্রথম খণ্ড) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/১০২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ধৰ্ম্মজীবন । গিয়াছে ; অগ্নিতে পদদ্বয় অদ্ধসিদ্ধ হইয়া গিয়াছে। আর কয়েক মিনিট বিলম্ব হইলেই তাহার জীবন বিনন্ট হইত। কোনও ইতর প্রাণীতে এরূপ কৰ্ত্তব্য-পরায়ণতা কি কেহ।। কখনও দেখিয়াছেন ? ৎপরে আর একটী প্ৰধান বিষয়ে ইত্যর প্রাণী হইতে মানবের পার্থক্য দেখিতে পাই ; তাহ অনন্তের ধ্যান ও আরাধনা ৷ প্ৰত্যেক পরিমিত সত্তা এক অনন্ত সত্তার ক্ৰোড়ে শায়িত এবং প্ৰত্যেক পরিমিত শক্তি এক মহাশক্তি হইতে উদ্ভূত, ইহা মানব ভিন্ন ইত্যর প্রাণী কখনও অনুভব করিতে পারে না । সুসভ্য ও অসভ্য সকল অবস্থাতে মানবের এই এক প্ৰধান লক্ষণ যে মানুষ উপাসনা-শীল জীব । মানব যেমন উদরান্নের জন্য কৃষি বাণিজ্যের বিস্তার করিয়াছে, মস্তক রাখিবার জন্য গৃহ নিৰ্ম্মাণ করিয়াছে, জ্ঞানালোচনার জন্য শিল্প সাহিত্যাদির সৃষ্টি করিয়াছে, তেমনি আরাধনার জন্য দেবমন্দির, উপাসনালয় প্রভৃতি নিৰ্ম্মাণ করিয়াছে। অপরাপর প্রাণীর ন্যায় দৃশ্য ও ইন্দ্ৰিয়-গ্রাহ্য বিষয় সকল যে মানবের অভিনিবেশ তাহাতে কিছুই বিচিত্ৰতা নাই, তাহা সকল প্ৰাণীর পক্ষেই স্বাভাবিক। কিন্তু এই অদৃশ্য পদার্থের প্রতি অভিনিবেশ, এই অতীন্দ্ৰিয় শক্তির আরাধনা, ইহা মানব প্রকৃতির এক গুঢ় রহস্য। মানবের ভাষা বোঝে না এবং মানবের ভাবের অনুরূপ ভাব যাহার নয়, এমন কোনও জীব। যদি মানবের এই আরাধনা ব্যাপার দর্শন করে, তবে তাহার পক্ষে ইহা অপেক্ষা অধিক বিস্ময়কর ব্যাপার। আর কিছুই হইতে পারে না ।