পাতা:ধর্ম্মজীবন (প্রথম খণ্ড) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তমোব বিদিত্বাতিমৃত্যুমোতি । SS জীবনের প্রতি আসক্ত ব্যক্তির পক্ষে মৃত্যু কি প্রকার পীড়াদায়ক তাহা একটী সামান্য দৃস্টান্ত দ্বারা প্ৰকাশ করা যাইতে পারে । এদেশে বালিকাদিগকে শৈশবে বিবাহ দিীৰার রীতি আছে। সেই সকল সুকুমারমতি শিশুকে ধরিয়া যখন পতিগৃহে প্রেরণ করিতে হয়, তখন তাহদের ক্ৰন্দনধ্বনিতে দিক সকল প্ৰতিধ্বনিত হইতে থাকে । ইহা তুমিরা অনেকবার প্রত্যক্ষ করিয়াছি। ঐ সকল বালিকার এত যন্ত্রণা পাইবার কারণ কি ? কারণ এই—তাহদের পিতা মাতা, ভাই ভগিনী, খেলিবার সঙ্গী সঙ্গিনী, খেলার ঘর প্রভৃতি যত কিছু ভালবাসার পদার্থ সমুদায় পশ্চাতে পড়িয়া রহিল, এবং তাহাদিগকে এরূপ একস্থানে লইয়া চলিল, যে স্থানের কথা ভাবিলে এমন এক খানিও মুখ মনে পড়ে না, যাহা স্মরণ হইলে প্রীতির উদয় হয় । সেইরূপ এই জগতে আসক্ত জীবের পক্ষে মৃত্যু অতীব যন্ত্রণাদায়ক। এক্ষণে প্রশ্ন এই—আসক্তি বা মোহ কেন জন্মে ? তদুত্তরে জ্ঞানিগণ বলিয়া থাকেন, যে মানব অনিত্য বস্তুকে নিত্য জ্ঞান করে বলিয়াই মোহের উৎপত্তি হয়। যাহা ক্ষণিক, ভঙ্গুর ও নশ্বর, তাহাকে মানুষ ভ্ৰান্তিবশতঃ অবিনশ্বর মনে করে, সেই জন্যই এই ঘোর কুহকের মধ্যে পড়িয়া যায়। সুতরাং মানব-হৃদয়ে যদি নিত্যানিত্য-বিবেকের উদ্রেক করা যায়, তাহা হইলে তাহারা আর মোহে আবদ্ধ হয় না । এরূপ মতের মধ্যে কিঞ্চিৎ আভ্ৰম আছে, তাহ পরে প্রদর্শন করা:যাইবে । কিন্তু আপাততঃ জ্ঞানমাৰ্গাবলম্বিদিগের যুক্তি যাহা তাহাই প্ৰদৰ্শন করা যাইতেছে।