পাতা:ধর্ম্মজীবন (প্রথম খণ্ড) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/৩১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

VO 8 ধৰ্ম্মজীবন । কিন্তু এই যে জগতে ধৰ্ম্মভাব বিতরণের চেষ্টা, ইহা হইতে আর এক প্রকার ফল উৎপন্ন হইয়াছে, তাহা হয়ত এই সকল মহাজন প্রার্থনীয় বলিয়া মনে করেন নাই। সে অনিষ্ট ফল এই, ধৰ্ম্মের বাহ ক্রিয়া সকল মানুষের বন্ধনস্বরূপ হইয়াছে। সাধকগণ সিদ্ধিলাভ করিয়া অন্তরস্থিত আধ্যাত্মিক ধৰ্ম্মকে লৌকিক ব্যবহারে প্রয়োগ করিয়া নানা প্রকার শাসন, নীতি ও সাধন-প্ৰাণালীর উপদেশ দিয়া গিয়াছেন । কিন্তু অজ্ঞ মানবগণ। সেই সকল বাহা ক্রিয়া-কলাপকেই ধৰ্ম্মবোধে তাহতেই আবদ্ধ হইয়া পড়িয়াছে। ধৰ্ম্ম বলিতে তাহারা তাহাই বোঝে ও সেই সকল নিয়মের পরিপালন করিয়াই আপনাদিগকে কৃতাৰ্থ মনে করে। এই বদ্ধ ধৰ্ম্মে যাহারা বাস করিতেছে তাহদের দৃষ্টি অতি সংকীর্ণ। ধৰ্ম্মের উদারভাব তাহদের অস্তরে নাই । তাহারা চিরদিন তুচ্ছ মত ও ক্রিয়া লইয়া ধৰ্ম্মের বহিঃপ্রাঙ্গণেই মারামারি করিতেছে । কোন নিয়মের বা বাহিরের কোন ক্রিয়ার কোথায় ক্ৰটী হইল, তাহারা তাহাই কেবল গণনা করে; অন্তরের প্ৰেম ঈশ্বরে অর্পিত হইল। কিনা তাহ অনুসন্ধান করে না । এইরূপে এই বদ্ধ ধৰ্ম্মের উপাসকগণ এরূপ এক ঘোর আত্মপ্ৰবঞ্চনার মধ্যে পড়িয়া থাকে যে মুক্তি লাভের দিকে কোনও দৃষ্টি থাকে না । চরিত্রে সকল প্ৰকার দুর্বলতা থাকিয়া যায়, সংসারাসক্তি হ্রাস না হইয়া উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাইতে থাকে, কাম ক্রোধাদি রিপুগণ- অবাধে রাজ্য করিতে থাকে, অথচ এই বদ্ধ ধৰ্ম্মের উপাসকগণ মনে মনে এই ভাবিয়া আপনাদিগকে প্ৰবোধ দেন যে ধৰ্ম্ম সাধন চুলিতেছে।