পাতা:ধর্ম্মজীবন (প্রথম খণ্ড) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/৩৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Vat-6 V8 এই দেখিতেছি নদীবক্ষে জলরাশি ধীর স্থির রহিয়াছে, দেখিতে দেখিতে কোন দিক হইতে বায়ু প্ৰবাহিত হইয়া আসিল অমনি সেই ধীর স্থির জলরাশি নৃত্য করিয়া উঠিল। ভাবের এই জোয়ার ভাটাতে আমরা নিরন্তর আন্দোলিত হইতেছি । ভাবে তৃতীয় স্বধৰ্ম্ম ইহা সংক্ৰামক । ইহা সংস্পৰ্শ নিবন্ধন এক হৃদয় হইতে হৃদয়ান্তরে গিয়া থাকে । ভাবের সংক্রামকতা যে কিরূপ আশ্চর্স্য তাহা স্মরণ করিলে অবাক হইতে হয় । জগতে দশজনে মিলিয়া যত কিছু সদনুষ্ঠান হইতেছে, তাহার সকলেরই মূলে ভাবের সংক্রামকতা বিদ্যমান রহিয়াছে। এক হৃদয়ের উৎসাহ, দশ হৃদয়ে ছড়াইয়া পড়িতেছে । জগতের মহাজনগণ এক এক জনে মানব সমাজে যে সুমহৎ বিপ্লব উৎপন্ন করিয়াছিলেন, তাহারও মূলে এই ভাবের সংক্রামকত। ইতিবৃত্তে দেখিতে পাই, ভাবের এই সংক্রামকতা নিবন্ধন এক এক দেশের সমস্ত প্ৰজা ক্ষেপিয়া উঠিয়াছে ; তুমুল রাষ্ট্রবিপ্লব ঘটিয়া গিয়াছে। ১৮৫৭ সালে এদেশে যে সিপাহী বিদ্রোহ উপস্থিত হইয়াছিল। তাহার মূলে এই ভ্ৰান্ত সংস্কার বিদ্যমান। ছিল, যে ইংরাজগণ ছলে বলে এদেশের লোকের জাতি ও ধৰ্ম্ম নষ্ট করিতে চান। এ প্রকার সংস্কারের কোনও মূল ছিল না। তথাপি এই সংস্কার ও তজ্জনিত বিদ্বেষবুদ্ধি দশ হৃদয় হইতে শত হৃদয়ে, শত হৃদয় হইতে সহস্ৰ সহস্ৰ হৃদয়ে ছড়াইয়া পড়িল, ও দেখিতে দেখিতে প্ৰকাণ্ড বিদ্রোহানল প্ৰজ্বলিত করিয়া তুলিল। ইহা অপেক্ষ ভাবের সংক্রামকতার উৎকৃষ্টতর উদাহরণ আর কি দেওয়া যাইতে পারে ।