পাতা:ধর্ম্মজীবন (প্রথম খণ্ড) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ዓቒ.. ধৰ্ম্মজীবন । হইবে ! সমগ্ৰ চরিত্রের দ্বারা ঈশ্বরের অৰ্চনা করিতে হুইবে । আরাধনাকে কোনও বিশেষ মুহুর্তের বা বিশেষ শব্দের ব্যাপার। মনে না করিয়া সমগ্র জীবনকেই আরাধনা করিতে হইবে । এই মহৎভাব ধৰ্ম্মজীবনের কি এক উন্নত ও মহৎ আদর্শ আমাদিগের সমীপে উপস্থিত করিতেছে । ব্ৰাহ্মধৰ্ম্ম মানব-জীবনের যে নূতন আদর্শ প্ৰদৰ্শন করিতেছেন, তাহার দ্বিতীয় লক্ষণ স্বাধীনতা । ঈশ্বর্যান্বেষণ, আত্মার উন্নতি সাধন ও মুক্তি লাভ বিষয়ে মানবাত্মা সম্পূর্ণ স্বাধীন এক অর্থে মহাত্মা বুদ্ধের উপদেশ অতীব সত্য। মুক্তি কেহ কাহাকেও দিতে পারে না । ধৰ্ম্মতত্ত্ব প্ৰত্যেককে স্বাধীনভাবে অন্বেষণ ও লাভ করিতে হয় । যাহার এই শ্ৰমে কাতর, যাহারা নিজেদের চিন্তা ও অন্বেষণের ভার অপরের উপর দিয়া স্বচ্ছন্দে বৃক্ষের তলে বসিয়া ধৰ্ম্মের সুখ ভোগ করিতে চান, প্ৰকৃত ধৰ্ম্মজীবন সেই শ্রমিকাতর ও অকৰ্ম্মণ্য ব্যক্তিদিগের জন্য নহে। মানবশিশু যেমন পড়িয়া উঠিয়া, উঠিয়া পড়িয়া হাটিতে শিখে, তদ্ভিন্ন হঁটিতে শিখিবার অন্য উপায় নাই, তেমনি হে মানব ! তোমাকেও তত্ত্বানুসন্ধান, তত্ত্বচিন্তা, আত্মদর্শন, পাপ প্রলোভনের সহিত সংগ্রাম, অনুতাপ, অশ্রুপাত প্রভূতির পথে ধৰ্ম্ম রাজ্যে প্ৰবেশ করিতে হইবে, এতদপেক্ষা সহজ পথ নাই। যদি এই আয়াস স্বীকারে অসম্মত হইয়া সহজ পথের অনুসন্ধানে প্ৰবৃত্ত হও, তবে তুমি প্রকৃত ধৰ্ম্মজীবন হইতে বঞ্চিত হইলে । ধৰ্ম্মজীবনের প্রাণ স্বাধীন চিন্তা ও স্বাধীন তত্ত্বান্বেষণ । কিন্তু এ স্বাধীনতা অহমিকা-প্ৰসূত নহে।